নাফের লোনাজল
মাগো,আজ সখেরবসে জাল ফেলেছিলাম নাফের জলে,
কিন্তু বার-বার জাল আটকে যাচ্ছিল কিছু একটাতে।
পরে নাও ছেড়ে জলে নামি জাল ছাড়াতে
কিন্তু মা, নাফের জল যে আজ বড়ই নোনতা।
দুটি ইলিশ উঠেছে জালে,আর একটি মুষ্ঠি বদ্ধ খন্ডিত হাত।
মাগো অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলে যে,
বিশ্বাস কর,একটুও মিথ্যা বলছিনা মা।
প্রথমে ইলিশের ঝাক দেখে আমিও ঠিক,
তোমার মতই অবাক হয়েছিলাম মা।
রহস্যের বেড়াজালে কম্পিত হলো হৃদয়,
পরে জাল গুটিয়ে নাও বাইতে থাকি উজানে
কিন্তু একি মা,ধর্ষিতা নারীর খন্ডিত মৃতদেহ!
সমভ্রমহীন মৃত মায়ের বুক চাটছে অবুঝ শিশু।
কৌতুহল আর আবেগ বুকে নিয়ে সামনে এগুতে থাকি,
পাশ থেকেই সবুজে ঘেরা আরাকান পর্বত দেখা যায়।
দূর থেকে রাখাইনদের আর্তনাদ ভেসে আসছিল কানে,
সাথে বারুদ আর জ্বলন্ত ধোয়ার গন্ধ।
আর একটু এগুতেই দেখি একপাশে সারি সারি লাশের স্তুপ,
তাদের খন্ডিত দেহ থেকে রক্ত গড়িয়ে পরছে নাফের জলে।
অপর পাশে জীর্ণ পোশাকের ক্ষুধার্থ মানুষের আর্তনাদ ;
দেশীয় শত্রু দ্বারই তারা আজ অরক্ষিত এবং নির্যাতিত।
তারা অশ্রুসিক্ত বিনয়ের সুরে আমার নাওয়ে ওঠতে চায়,
প্রাণ আর ইজ্জতের ভয়ে তোমার ছোট্ট কুটিরে তারা আশ্রয় চায়।
তখন মা আমার,আর কিছুই বোঝার বাকী রইলনা।
তাদের রক্ত ঘাম আর অশ্রু জলেই নাফের জল আজ নোনতা
মানিকগঞ্জ২৪/ ১৬ সেপ্টেম্বর/ ২০১৭।