মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হামজা গ্রামে স্বামীর পেনশনের গ্রহণের অভিভাবক নিযুক্তিতে প্রতারণা করার প্রতিবাদ করায় বিধবা নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শাশুড়ি, দেবর ও ননদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিধবা জাহানারা আক্তার। শশুর বাড়ী লোকজনের হামলার শিকার হয়ে সে এখন সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর প্রতারণার ব্যাপারে ওই ভুক্তভোগী নারী সিআইডির এডিশনাল আইজি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের হামজা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের বড়পুত্র ও জাহানারা আক্তারের স্বামী মো. আনোয়ার হোসেন ঢাকার মালিবাগে এএসআই হিসেবে সিআইডিতে কর্মরত থাকাবস্থায় গত ২০১৯ সালের ৭ আগষ্ট তারিখে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান।
মৃত্যুকালে আনোয়ার হোসেন ১ম স্ত্রীর ঔরশজাত অপ্রাপ্ত বয়স্ক ২ ছেলে শাহ জালাল পিয়াস (১১) ও শাহ পরান রাজ (৭) এবং ২য় স্ত্রী জাহানারা আক্তারকে (৩৩) রেখে যান। মৃত্যুজনিত কারণে পেনশন গ্রহণের অভিভাবক নিযুক্তির চেয়ারম্যান প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রে জাহানারা আক্তারের শাশুড়ি মমতাজ বেগমকে অভিভাবক মনোনিত করে জাহানারা আক্তারকে তা না জানিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দেবর ওয়াশিমুর রহমান স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা জানার পর জাহানারা আক্তার গত ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর সিআইডির এডিশনাল আইজি বরাবর স্বামী মৃত্যুর আনুতোষিক ও অবসর ভাতা উত্তোলন করার ক্ষমতা অর্পন নিজনামে প্রাপ্তির আবেদন করেছেন এবং প্রতারণা করে শাশুড়িকে অভিভাবক নিযুক্তির প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ ঘটনা নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারী শনিবার বিকালে জাহানারা আক্তারকে তার দেবর ওয়াশিমুর রহমান, ২ ননদ ও শ্বাশুড়ি মারধোর করে আহত করে ও ঘর থেকে বের করে দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এখনো তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাহানারা আক্তার জানান, প্রতারণা করে অভিভাবক নিযুক্তির ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় আমার দেবর ওয়াশিমুর রহমান, দুই ননদ এবং শাশুড়ি মিলে আমাকে গত শনিবার বিকালে বেদমভাবে মারধোর করে এবং টেনে হেচড়ে ঘর থেকে আমাকে বের করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এবং বলে এ বাড়িতে তোর কোন ঠাঁই নাই, যেখানে খুশি সেখানে চলে যা। এখানে তোকে আমরা রাখব না। আর যদি এখানে থাকতে চাস তাহলে তোর করুণ পরিণতি হবে। আগের ঘরের অবুঝ ২ সন্তান ও আমার স্বামীর পেনশন এবং তার সহায় সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্যেই দেবর-ননদ ও শাশুড়ি মিলে আমাকে বেদম প্রহার করে আহত করেছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, আহত রোগী জাহানারা আক্তার আশংকা মুক্ত হলেও শরীলে বেশ আঘাত পেয়েছেন। তাকে আরও ২/৩ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৭ জানুয়ারী ২০২০।