সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ১২ ফেব্রুয়ারী: জেলার সাটুরিয়ার ডাক বাংলোতে এক তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত সেই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ১টার দিকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সাত নম্বর আদালতে তাদের হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার তাদের ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আবুল কালাম নিশ্চিত করেছেন।
রিমান্ডে পাঠানো পাঠানো দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলে হলেন এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলাম।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী সোমবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাটুরিয়া থানায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার আগে দু’জনের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামিমের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তখন দুই কর্মকর্তাকেই থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান এবং জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হামিদুর রহমান সিদ্দিকীর সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।
গত সোমবার রাতেই ভুক্তভোগী ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. লুৎফর রহমান মঙ্গলবার ২ টার দিক দুপুরে বলেন, আমরা দ্রুত ঐ তরুনীর মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদন পুলিশের নিকট জমা দিব।
ভুক্তভোগী তরুণীর করা মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গেল বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগী তরুণী খালার সঙ্গে সাটুরিয়া থানায় পাওনা টাকা আনতে যান। থানায় যাওয়ার পর সেকেন্দার তাদেরকে থানার পাশে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে বসে পাওনা টাকার বিষয়ে কথাবার্তা বলার সময় এএসআই মাজহারুল সেখানে উপস্থিত হন। এরপর ওই নারীকে কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। আর তরুণীকে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই কর্মকর্তারা ইয়াবা ট্যাবলেট সেবনে বাধ্য করান। ইয়াবা সেবনের পর তিনি অসুস্থ বোধ করেন। এরপর থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই কক্ষে আটকে রেখে দুই কর্মকর্তা তরুণীকে কয়েক দফা ধর্ষণ করেন।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনূল ইসলাম বলেন, মামলা দায়ের করার পর সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দার হোসেন ও এএসআই মাজহারুল ইসলাম কে গ্রেফতার করা হয়। রাতে গ্রফতার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। পরে মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল মজিদ ফটো। বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নজরুল ইসলাম বাদশা। আইনজীবী বাদশা জানান, আদালতে তোলার পর পুলিশ ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করে। তবে শুনানি শেষে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামিম বলেন, পুলিশ সদস্য বলে তাদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না। মানিকগঞ্জ পুলিশ তাদের বিরুদ্বে শক্ত অবস্থানে আছে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯।
আরও পড়ুন: