মোহাম্মদ
হাসান ফয়জী: মেয়েডার বাড়ি পানিতে ডুবছে, ক্ষেতর হগল ধান ভাসছে নাতিগো লিগা কিছু খাবার
নিয়া আইছি, বাজারে আইয়া সড়ক পাই না। নাওয়ে চইরা যাওন লাগব। পান খাওনের ভাড়া মাঝি চায় ৫০ টেহা। তাও গেছি মাঝি না পাইলে কেমনে যাইতাম। এমন ভাবেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত
কন্যাকে দেখতে আসা এক মা নৌকার ভাড়া সম্পর্কে বলছিলেন।
হাসান ফয়জী: মেয়েডার বাড়ি পানিতে ডুবছে, ক্ষেতর হগল ধান ভাসছে নাতিগো লিগা কিছু খাবার
নিয়া আইছি, বাজারে আইয়া সড়ক পাই না। নাওয়ে চইরা যাওন লাগব। পান খাওনের ভাড়া মাঝি চায় ৫০ টেহা। তাও গেছি মাঝি না পাইলে কেমনে যাইতাম। এমন ভাবেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত
কন্যাকে দেখতে আসা এক মা নৌকার ভাড়া সম্পর্কে বলছিলেন।
রাবেয়া
বেগম নামে ঐ মহিলা ঘিওর উপজেলার নালি ইউনিয়নের মাসাইল গ্রামে নৌকায় উঠার আগে এ কথা
গুলি বলছিলেন। কলতা বাজার থেকে মাসাইল গ্রামে নৌকায় পার হচ্ছিলেন জামাল মিয়া (৫০), তার বাড়িতে কাজের জন্য দুই বস্তা
সিমেন্ট লাগবে। অন্য সময় ১০ টাকা রিক্সা ভাড়া হলেই হয়। কিন্ত নৌকায় তার বাড়িতে যেতে ভাড়া
চাচ্ছে ৭০ টাকা।
বেগম নামে ঐ মহিলা ঘিওর উপজেলার নালি ইউনিয়নের মাসাইল গ্রামে নৌকায় উঠার আগে এ কথা
গুলি বলছিলেন। কলতা বাজার থেকে মাসাইল গ্রামে নৌকায় পার হচ্ছিলেন জামাল মিয়া (৫০), তার বাড়িতে কাজের জন্য দুই বস্তা
সিমেন্ট লাগবে। অন্য সময় ১০ টাকা রিক্সা ভাড়া হলেই হয়। কিন্ত নৌকায় তার বাড়িতে যেতে ভাড়া
চাচ্ছে ৭০ টাকা।
মানিকগঞ্জে
মৌসুমি নৌকার মাঝিরা ফুরফুরে মেজাজে আছে। এই বন্যায় তাদের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিনে
১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করছে। আবার বন্যায় আক্রান্ত মানুষরাও টাকা বেশী হলেও এসব মৌসুমি মাঝিদের নৌকায় চড়ে গন্তব্যস্থানে যেতে পেরে খুশি।
মৌসুমি নৌকার মাঝিরা ফুরফুরে মেজাজে আছে। এই বন্যায় তাদের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দিনে
১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করছে। আবার বন্যায় আক্রান্ত মানুষরাও টাকা বেশী হলেও এসব মৌসুমি মাঝিদের নৌকায় চড়ে গন্তব্যস্থানে যেতে পেরে খুশি।
মানিকগঞ্জের
৭টি উপজেলার ৬টিই বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও
এখনও অনেক রাস্তা ঘাট পানির নিচে রয়েছে। অনেক গ্রামেই বাড়ী থেকে প্রধান সড়কে উঠতে হলে
নৌকায় পার হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। ফলে এখনও হাজার হাজার মানুষের একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা।
৭টি উপজেলার ৬টিই বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও
এখনও অনেক রাস্তা ঘাট পানির নিচে রয়েছে। অনেক গ্রামেই বাড়ী থেকে প্রধান সড়কে উঠতে হলে
নৌকায় পার হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। ফলে এখনও হাজার হাজার মানুষের একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা।
জেলার
সাটুরিয়া, হরিরামপুর, ঘিওর, দৌলতপুর, সদর, হরিরামপুর এবং সিংগাইর উপজেলার আংশিক এলাকা
এখনও পানিবন্দি রয়েছে। এসব এলাকার ছাত্র- ছাত্রী ও গ্রামবাসীর এক মাত্র ভরসা এখন
নৌকা।
সাটুরিয়া, হরিরামপুর, ঘিওর, দৌলতপুর, সদর, হরিরামপুর এবং সিংগাইর উপজেলার আংশিক এলাকা
এখনও পানিবন্দি রয়েছে। এসব এলাকার ছাত্র- ছাত্রী ও গ্রামবাসীর এক মাত্র ভরসা এখন
নৌকা।
বর্ষা
এলেই মানিকগঞ্জে মৌসুমি মাঝিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। সারা বছর অন্য পেশার সাথে থাকেন।
কিন্ত বন্যা হলে তারা বেকার হয়ে পড়েন। তাই বন্যায় ঐসব বেকার শ্রমিক ও অন্যান্য
পেশার মানুষ মৌসুমি মাঝি হয়ে পড়েন।
এলেই মানিকগঞ্জে মৌসুমি মাঝিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। সারা বছর অন্য পেশার সাথে থাকেন।
কিন্ত বন্যা হলে তারা বেকার হয়ে পড়েন। তাই বন্যায় ঐসব বেকার শ্রমিক ও অন্যান্য
পেশার মানুষ মৌসুমি মাঝি হয়ে পড়েন।
অপরদিকে
জেলার ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা ও ইছামতি নদীর বিভিন্ন বড় বড় ব্রীজের নিচেও মৌসুমি মাঝিদের
ব্যাপক চাহিদা থাকে। বন্যার পানি এলেই শহর কিংবা গ্রামের মানুষ নৌকা নিয়ে বেড়াতে যান
পরিবার নিয়ে। এখানে ঘন্টা চুক্তিতে নৌকার মাঝিরা পাল ছাড়েন।
জেলার ধলেশ্বরী, কালিগঙ্গা ও ইছামতি নদীর বিভিন্ন বড় বড় ব্রীজের নিচেও মৌসুমি মাঝিদের
ব্যাপক চাহিদা থাকে। বন্যার পানি এলেই শহর কিংবা গ্রামের মানুষ নৌকা নিয়ে বেড়াতে যান
পরিবার নিয়ে। এখানে ঘন্টা চুক্তিতে নৌকার মাঝিরা পাল ছাড়েন।
জেলার
ঘিওর উপজেলার নালি ইউনিয়নের মাসাইল গ্রামের ছাত্তার, সারা বছর কৃষি কাজ করেন, কিন্ত
তার এলাকায় বন্যার পানি উঠায় নৌকা ছাড়া যাওয়া যায় না। তাই তিনি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে
নৌকা বানিয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত নৌকা চালিয়ে যা আয় হয় তাই
দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন।
ঘিওর উপজেলার নালি ইউনিয়নের মাসাইল গ্রামের ছাত্তার, সারা বছর কৃষি কাজ করেন, কিন্ত
তার এলাকায় বন্যার পানি উঠায় নৌকা ছাড়া যাওয়া যায় না। তাই তিনি ১৫ হাজার টাকা দিয়ে
নৌকা বানিয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত নৌকা চালিয়ে যা আয় হয় তাই
দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন।
একই
গ্রামের নৌকার মাঝি ফরিদ মিয়া ১৬ বছর ধরে মৌসুমি নৌকার মাঝি। বন্যা এলে প্রায় আড়াই
মাস ধরে নৌকা চালিয়ে সংসার চালান। সকাল ১১ টা পর্যন্ত যাত্রীর চাপ থাকে বেশী। তাই এ সময়ে
বেশী ইনকাম হয়। দুপর ১ টা থেকে আবার ঘাটে চলে আসি।বন্যা পানি কমে গেলেই আবার নিজ পেশা শ্রমিকের কাজে ফিরে যাবে।
গ্রামের নৌকার মাঝি ফরিদ মিয়া ১৬ বছর ধরে মৌসুমি নৌকার মাঝি। বন্যা এলে প্রায় আড়াই
মাস ধরে নৌকা চালিয়ে সংসার চালান। সকাল ১১ টা পর্যন্ত যাত্রীর চাপ থাকে বেশী। তাই এ সময়ে
বেশী ইনকাম হয়। দুপর ১ টা থেকে আবার ঘাটে চলে আসি।বন্যা পানি কমে গেলেই আবার নিজ পেশা শ্রমিকের কাজে ফিরে যাবে।
হরিরামপুর
উপজেলার জামাল উদ্দিন কসমেটিক্স ব্যবসায়ী, বন্যা আসায় এ ব্যবসায় এখন মন্দা চলছে। তার এলাকার
৫-৬ টি গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। তাই দায়িত্ত্ববোধ
থেকে নৌকা চালাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন । রাস্তা থেকে বাড়ি পর্যন্ত প্রতি টিপে ৫-৬ জন যাত্রী নেওয়া যায়। ছাত্র-
ছাত্রী আসলে ৫ টাকা আর অন্য মানুষ নিলে ১০ টাকা নেই।
উপজেলার জামাল উদ্দিন কসমেটিক্স ব্যবসায়ী, বন্যা আসায় এ ব্যবসায় এখন মন্দা চলছে। তার এলাকার
৫-৬ টি গ্রাম পানিবন্দি রয়েছে। তাই দায়িত্ত্ববোধ
থেকে নৌকা চালাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন । রাস্তা থেকে বাড়ি পর্যন্ত প্রতি টিপে ৫-৬ জন যাত্রী নেওয়া যায়। ছাত্র-
ছাত্রী আসলে ৫ টাকা আর অন্য মানুষ নিলে ১০ টাকা নেই।
অপরদিকে
সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি, বরাইদ ও দিঘুলিয়া ইউনিয়ন পানিবন্দি। এসব এলাকার অনেক গ্রামের
ফসলি ক্ষেতে এখন পানি আর পানি। এসব স্থানে ভাসমান নৌকা পাওয়া যায়। বিকাল হলেই গ্রামের
বিভিন্ন মানুষ পরিবার নিয়ে নৌকায় বেড়াতে যায়। গোপালপুর গ্রামে বিকাল হলেই ধলেশ্বরী নদীর তীর মুখরিত হয়ে পড়ে মানুষের ভীড়ে।
সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি, বরাইদ ও দিঘুলিয়া ইউনিয়ন পানিবন্দি। এসব এলাকার অনেক গ্রামের
ফসলি ক্ষেতে এখন পানি আর পানি। এসব স্থানে ভাসমান নৌকা পাওয়া যায়। বিকাল হলেই গ্রামের
বিভিন্ন মানুষ পরিবার নিয়ে নৌকায় বেড়াতে যায়। গোপালপুর গ্রামে বিকাল হলেই ধলেশ্বরী নদীর তীর মুখরিত হয়ে পড়ে মানুষের ভীড়ে।
জেলার
ঘিওর, হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের এসব মৌসুমি মাঝিদের সাথে কথা বলে জানা যায়,
মানিকগঞ্জে এ বছর বন্যায় অন্তত সহস্রাধিক মৌসুমি মাঝি আছে, যারা এ মৌসুমে নৌকা চালিয়ে সংসার
চালাচ্ছেন। আর এবছর বন্যার পানি বেশী হওয়ায় তাদের বেশী টাকা আয় হচ্ছে।
ঘিওর, হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের এসব মৌসুমি মাঝিদের সাথে কথা বলে জানা যায়,
মানিকগঞ্জে এ বছর বন্যায় অন্তত সহস্রাধিক মৌসুমি মাঝি আছে, যারা এ মৌসুমে নৌকা চালিয়ে সংসার
চালাচ্ছেন। আর এবছর বন্যার পানি বেশী হওয়ায় তাদের বেশী টাকা আয় হচ্ছে।
হরিরামপুর
উপজেলার চালা ইউনিয়ন পরিষদের পাশের সড়কে কথা হয় নৌকা মাঝি রহমানের সাথে, তিনি
বলেন, অনেক গ্রামে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। নিয়মিত মানুষ পারাপার ছাড়াও
বিকাল বেলা রিজার্ভ খ্যাপ হয় বেশী। প্রতি ঘন্টা ১০০ – ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়।
উপজেলার চালা ইউনিয়ন পরিষদের পাশের সড়কে কথা হয় নৌকা মাঝি রহমানের সাথে, তিনি
বলেন, অনেক গ্রামে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। নিয়মিত মানুষ পারাপার ছাড়াও
বিকাল বেলা রিজার্ভ খ্যাপ হয় বেশী। প্রতি ঘন্টা ১০০ – ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়।
বেউথা
ব্রীজের নিচে কথা হয় আশা অফিসে চাকরী করা এক দম্পতির সাথে । এক ঘন্টা বেড়াতে ২৫০ টাকা দিলেও ঘুরতে ভালই লাগছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
ব্রীজের নিচে কথা হয় আশা অফিসে চাকরী করা এক দম্পতির সাথে । এক ঘন্টা বেড়াতে ২৫০ টাকা দিলেও ঘুরতে ভালই লাগছে বলে তারা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য,চলতি বন্যায় মানিকগঞ্জের ৬ টি উপজেলা আক্রান্ত হয়। এসব উপজেলার ৪৩ ইউনিয়নের ৬০৩ টি
গ্রামের ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯ শত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বন্যার পানি কমতে শুরু
করলেও ঐসব এলাকার মানুষকে এখনও নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে ।
গ্রামের ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯ শত মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বন্যার পানি কমতে শুরু
করলেও ঐসব এলাকার মানুষকে এখনও নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে ।
মানিকগঞ্জ
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টের গেজ
রিডার (জিআর) মো. ফারুক
হোসেন রবিবার রাতে জানান, যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টের গেজ
রিডার (জিআর) মো. ফারুক
হোসেন রবিবার রাতে জানান, যমুনা নদীর পানি আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ২৪/
হা.ফ/ ২৭ আগস্ট/ ২০১৭।
হা.ফ/ ২৭ আগস্ট/ ২০১৭।