মানিকগঞ্জ২৪ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জে গাভীর দুধের দাম কমে গেছে। ঈদের দুই দিন পর থেকেই স্বাভাবিক দামের চেয়ে কম দামে বিক্রি করাতে কৃষকের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। দুধ উৎপাদনের খরচই উঠাতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকরা।
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার ৬৫ টি ইউনিয়নের হাট বাজারেই বর্তমানে দুধ কম দামে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে রমজান মাসে ২২ রোজা পর্যন্ত ২৫-৩০ টাকা লিটারে দুধ বিক্রি হয়েছে। ২৩ রোজা থেকে ৩০ রোজা পর্যন্ত ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি হলেও ঈদের পর থেকেই আবার দুধের দাম কমে যায়।
বুধবার জেলার কয়েকটি দুধের বাজার ঘুরে দেখা গেছে ২৫-৩০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটী বাজারে গিয়ে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে দেখা যায়, অন্তত দুই শতাধিক বিক্রেতার সমাগম কিন্তু দুধের ক্রেতা নেই। ফলে ২৫-৩০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা খুশি হলেও গাভীর খামরিরা লোকসানে পড়তে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গাভীর মালিক মহর জানান, রমজান মাসে আমারা ২৫-৩০ টাকা লিটারে বিক্রি করছি, ঈদের পরও দুধের দাম পাচ্ছি না। বুধবারও ১ ঘন্টা বসে থেকে ১২ লিটার দুধ বিক্রি করছি ৩০ টাকা লিটারে। ভুষি ও কুড়া, খইলের দাম বাড়লেও আমারা দুধের উপযুক্ত দাম পচ্ছি না ।
এ ব্যাপারে গাভীর মালিক পাখি জানান, বালিয়াটী বাজারে প্রায় দেড় ঘন্টা বসে থেকে দুধের দাম কম থাকাতে বাড়ী ফেরত নিয়ে গিয়েছি। এভাবে কতদিন করব।
দুধ বিক্রি করতে আসা জলিল জানান, আমার ৩ টি গাভী আছে। সারা দিন এ গাভীর পিছনেই আমি সময় দেই। এত পরিশ্রম করে যখন ২৫- ৩০ টাকা লিটারে বিক্রি করলে আমাদের উৎপাদন খরচত উঠে না। কমপক্ষে ৪০ টাকা লিটার বিক্রি করতে পারলে আমাদের পোশায়। এভাবে লোকসান হতে থাকলে গাভী পালতে পারব না।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফারহাদুল আলম জানান, মানিকগঞ্জ জেলা একটি দুধ উৎপাদনে সমৃদ্ধ জেলা। এ জেলায় দুধ উৎপাদনের বার্ষিক লক্ষ মাত্রা হচ্ছে ১২৭০.২০ লক্ষ লিটার। উৎপাদন হয় ১৫০০.৩৩ লক্ষ লিটার । ফলে লক্ষ মাত্রার চেয়ে ২৩০.১৩ লক্ষ লিটার বেশী দুধ উৎপাদন হয়। এখান কার উৎপাদিত দুধ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায়, সাভার ও ঢাকার বিভিন্ন মিষ্টির দোকান গুলিতে। কোন কারনে পাইকারা ঢাকায় দুধ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেই মানিকগঞ্জে দুধের দাম কমে যায়। আমরা দুধ রক্ষণা বেক্ষণ করার জন্য আমারা ইতিমধ্যে একটি প্রকল্প নেবার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে জানিয়েছি।
হরতাল ও বিভিন্ন কারণে ঢাকায় দুধের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলেই পানির দামে দুধ বিক্রি করতে হয় মানিকগঞ্জের কৃষকদের। তাই কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য দ্রæত সংরক্ষণাগার নির্মাণ হবে এমটাই প্রত্যাশা সকলের।