মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি অবহেলা অযত্নে থাকায় ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী ॥ মানিকগঞ্জে চিত্ত বিনোধনের একমাত্র স্থান জেলা প্রশাসক চত্তরে মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি অবহেলা অযত্নে থাকায় তা ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে আড়াই লক্ষাধিক লোকের বসবাসের এই মানিকগঞ্জে চিত্ত বিনোধনের ভাল কোন ব্যাবস্থা না থাকায় শিশু কিশোরদের মানসিক বিকাশে বাধা গ্রস্থ হচ্ছে।

শহরের প্রাণ কেন্দ্রে জেলার সুসীল সমাজের দাবীতে ওয়ান ইলিভেনের সময় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক চত্তরে ছোট পরিসরে তৈরি হয় মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্ক। শুরুতে আড়াই লক্ষ লোকের বসবাস এই পৌরসভা ও জেলা শহরের মানুষের আশার আলো ছড়ালেও বেশী দিন সুখকর হয় নি। অবহেলা ও অযন্তে এ পার্কটি এখন ঘাসের ও আগাছায় ভরে ভূতরে শিশু পার্কে পরিণত হয়েছে। শিশুদের জন্য নির্ধারিত খেলা দূলার যে সামগ্রী ছিল তা ব্যাবহার অযোগ্য হয়েছে পার্কটির উদ্ধোধনের পর পরই। তাছাড়া পার্কের ভিতরে সদর উপজেলা রেজিষ্ট্রী অফিসের ভেন্ডাররা খুপরী তৈরি করে বসাতে পরিবেশ আরো নষ্ট হচ্ছে।

বুধবার শহরের এ মুক্তিযোদ্ধা পাকর্টি ডুকতেই দেখা যায় মুল গেটে নাম নিয়ে বিড়ম্বনা। মুক্তিযোদ্ধা নামটি বসানো হয়েছে ভুলভাবে। পার্কটির ভিতরে গিয়ে দেখা যায় ঘাসে ভর্তি।  এমন ভাবে অগাছা ও ঘাষ বড় হয়েছে দেখলে মনে ঝুড়জাপটা। ১০-১৫ টি রাইডারের একটিও ভাল নেই। ফলে এখানে কোন শিশু কিশোর রা চিত্তবিনোধনের জন্য আসেন না।

পার্কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মানিকগঞ্জ সরকারী গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী রিমঝিম জানান, এ পার্কটি যখন করে তখন আমারা নিয়মিত আসতাম। কিন্তু কিছুদিন পর এ পার্কের সব শিশুদের খেলার সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। তা মেরামত না করার কারনে এখানে আর আসা হয় না।

রুপান্তর নামে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র জানান, আমার বাসার অতি নিকটে থাকলেও খেলাদুলার অপযোগী না থাকায় এখানে আসায় হয় না।   

এ ব্যাপারে এক অভিভাবক জানান, পার্কটির বর্তমান অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, ঝুর ঝাপটার নিচে মাদক সেবীদের আশ্রয় স্থল হয়েছে।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট দীপক চন্দ্র ঘোষ জানান, মানিকগঞ্জ শহরের ভিতরে পৌরসভার ভিতরে একমাত্র শিশু পার্কটি হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক। শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য তত্তাবধায়ক সরকারের সময় এ পাকর্টি গড়ে উঠলেও প্রশাসনের অবহেলার কারনে ব্যাবহার যোগ্য নেই। আমরা বিভিন্ন দিন ধরে এই পার্কটি সচল করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী তুলে আসছি। আমরা আশা করব জেলা প্রশাসন ও পৌর মেয়র ঈদের আগেই যেন ব্যাবহার যোগ্য করে তুলে।                                                                                                                                                                                               

মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম জানান, মানিকগঞ্জ বাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা হচ্ছে শিশু পার্ক, চাহিদা অনুযায়ী অনেক মানববন্ধন করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন কোর্ট প্রাঙ্গনে এ শিশু পার্কটি বাস্তবায়ন করলেও তা ছিল অপ্রুতুল্য। প্রথম প্রথম এখানে ছেলে মেয়েরা গেলেও বর্তমানে ঘাষ, ময়লা ও খেলার সামগ্রী সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে এখন আর যেতে পারে না।

তিনি আরো জানান, সবার সহযোগীতা নিয়ে আড়াই লক্ষের এ শহর বাসীর জন্য বড় পরিসরে একটি আধুনিক পার্ক করার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে নতুন পার্কটি নিমাণের আগ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি পৌরসভা কে দেখা শুনার দায়িত্ত দিলে আমি পরিস্কার পরিচচ্ছন্নসহ নতুন নতুন খেলনা সামগ্রী বসাব।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুছ সাদাত সেলিম জানান, আমি সম্প্রতি এখানে যোগদান করেছি। ময়লা আবর্জনাসহ ব্যাবহার অনউপযোগী থাকার কথা এ প্রতিবেদকের নিকট শুনে সংগে সংগে পৌর মেয়রকে দেখা শুনার দায়িত্ত দেন। এ পার্কটি পূনরায় শিশু- কিশোরদের নিকট আকর্ষনীয় করতে সকল ব্যাবস্থা করবে বলেও জানান।

আড়াই লক্ষের বসবাস এই শহরে আধুনিক মানসম্মত পার্ক  নির্মাাণের আগ পর্যন্ত এ মুক্তিযোদ্ধা শিশু পার্কটি যেন শিশু কিশোরসহ সকল মানুষের বিনোধনের উপযোগী স্থানে পরিণত হয় এমনটাই আশা করছেন শহরবাসী।

আরো পড়ুুন