মানিকগঞ্জের শিক্ষিত যুবকের শিক্ষার আলো পাঠশালা ঘর ছেড়ে দিতে চাপ দেওয়ায় ব্যাতিক্রমি শিক্ষা কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে

মানিকগঞ্জ2৪ প্রতিনিধি ॥ সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারা দিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি, কবিতার মতই সত্যিকারে ভাল হয়ে চলার পথ দেখাচ্ছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড গ্রামের শিক্ষিত যুবক সানী রহমান মিন্টু। মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র বিশ্ব বিদ্যালয়ের মাষ্টার্স শেষ পর্বে অধ্যয়নরত এ যুবক নিজে টিউশনি করে যা আয় করেন তা দিয়ে পিতা- মাতাহীন, দিনমজুরদের সন্তান, যারা অন্য সহপাঠীদের সাথে তাল মিলাতে পার ছিল না, সৈ সমস্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন শিক্ষার আলো পাঠশালা।

প্রায় ৪ বছর স্থানীয় একটি এনজিউর কিস্তি আদায়ের ঘরেই চলছিল এ ব্যাতিক্রমী পাঠশালা। ২০১৪ সাল থেকে তিনি সম্পুর্ণ বিনা মুলে সকাল ৬ টা থেকে সাড়ে ৮ পর্যন্ত ৩য় শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী ছাত্র ছাত্রীদের ২ ব্যাচে পাইভেট পড়িয়ে আসছেন। তার ব্যাতিক্রমী এ পাঠশালা ৬০ জন শিক্ষার্থী পড়া শুনা করছে। ছাত্র ছাত্রীরা ভাল ফলও পাচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু স্থানীয় একটি এনজিওর কিস্তি আদায়ের ঘরে চলছিল এ পাঠশালা। ঘরের মালিক ৪ বছর পর ব্যক্তিগত কারনে আর পড়াতে দিবে না। ঘর খালি করার চাপ দিচ্ছে নিয়মিত। ফলে সত্যিকারের আলো ছাড়ানো বিদ্যালয়টি এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

মিন্টুর এ পাঠশালায় পড়–য়া শিক্ষার্থীর পিতা মন্টু মিয়া জানান, তার মেয়ে এখানে পড়া শুনা করে ভাল ফলাফল করেছে। পাঠশালার ঘরের মালিক মিন্টু কে আর পড়াতে দিবে না। তাহলে ৬০জন শিক্ষার্থী নিয়ে মিন্টু এখন কোথায় গিয়ে দারাবে।

শিক্ষার আলো পাঠশালটির শিক্ষক সানী রহমান মিন্টু জানান, গ্রামের অতি দরিদ্র ছাত্র- ছাত্রী যারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহপাঠিদের সাথে তাল মেলাতে পারছিল না। এমন শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পড়ানোর জন্য ২১৪ সালে শিক্ষার আলো পাঠশালা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠিান গড়ে তুলি। যেখানে পড়া শুনার পাশা- পাশি বাল্য বিবাহ, যৌতুক, মাদক বিরোধী ও পাখির আবাসন গড়ে তুলার জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছি। আমার এখান থেকে ২০১৬ সাল থেকে পিএসসিতে ১ জন এ+, ১০ জন এ গ্রেড পেয়েছে। কিন্তু এখন ঘরের মালিক এখানে পড়াতে দিবে না। সে নিয়মিত চাপ দিচ্ছে ঘরটি ছেড়ে দেবার জন্য।

মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার  জানান, মিন্টুর ব্যতিক্রমি এ পাঠশালায় স্থানীয় ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে পড়ানো হয়, তা একটি মহতি উুদ্যোগ। আমি কয়েক দিন গিয়েছি এবং জেলা প্রশাষনের সহায়তায় তাকে ৭ শতাংশ জমি লিজ দেওয়া হয়েছে, নিচু হওয়ায় সেখানে ৯০ হাজার টাকার মাটি ফেলা হয়েছে। ঘর তৈরি করতে আরও মাটি ফেলতে হবে। মিন্টু যেন সেখানে আরও কিছু দিন পাঠদান করাতে পারে তার আশ্বাস দিলেন এ কর্মকর্তা।

শিক্ষার আলো পাঠশালা তার নিজস্ব ঘরে পিতা- মাতাহীন ও হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে আরো আলো ছাড়াবে এমনটাই প্রতশ্যা করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অসহায় অভিবাবকগণ।

আরো পড়ুুন