ঘিওরে বাংলাদেশের সব চে‌য়ে বড় ডেগ ! রান্না করা যাবে ৭১ মন খাবার

‌মো: সো‌হেল রানা খান, বিশেষ প্রতিনিধি:
যে
দে‌খে সেই ব‌লে জীব‌নে প্রথম দেখলাম এতো বড় ডেগ। ‌রান্না করার পাত্র বা
ডেগ যে এতো বিশ‌াল অাকৃ‌তির হ‌তে পা‌রে তা না দেখ‌লে বিশ্বাস করা যা‌বে
না। দেখ‌তে একটা ঘ‌রের সমান, ভিত‌রে কিছু দি‌তে হ‌লে ‌ডে‌গে (রান্নার জন্য
ব্যবহৃত পাত্র) উঠ‌তে হয় মই দি‌য়ে। অাবার ডে‌গের ভিতর রান্না করার সময়
নাড়াচাড়া কর‌তে বি‌শেষ ভা‌বে তৈ‌রি করা হ‌য়ে‌ছে মোট‌রের য‌ন্ত্রের, খাবার
তুল‌তে ভেকুর ম‌তো অা‌রেক‌টি যন্ত্র বানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। অাবার ডেগ‌টি‌তে
রান্না কর‌তে তৈ‌রি করা হ‌য়ে‌ছে ইটের তৈ‌রি বি‌শেষ ধর‌নের চূলার। এক‌টি ডেগ
‌নি‌য়ে এতো সব অা‌য়োজন।
 
বাংলা‌দে‌শের সব চে‌য়ে বড় ডেগ তৈ‌রি
হ‌য়ে‌ছে মা‌নিকগ‌ঞ্জের ঘিওর উপ‌জেলার  বানিয়াজুড়ি  ইউনিয়নের জাবরা ইমাম বাড়ী দরবার শরীফে।  যা‌তে রান্না করা যা‌বে ৭১ মন খাবার।
মা‌নিকগ‌ঞ্জের জাবরা ইমাম বাড়ী, দরবার শরীফের পীর সা‌হেব হযরত মাওলানা
খাজা অাবুল কালাম অাজাদ চিশতী আধ্মাতিক ধ্যান করার সময় এ রকম এক‌টি ডেগ
তৈ‌রির নি‌র্দেশনা পান। প‌রে ভারতের খাজা মাজার শ‌রি‌ফের খা‌দেমের নি‌দের্শ
ক্র‌মে এই ডেগ তৈ‌রি করা হয়।
 
অাগামী ১৪ ও ১৫ সে‌প্টেম্বর
‌জৌনপুরী খ‌লিফা শাহ সূ‌ফি হযরত মাওলানা মরহুম মাগফুর এখলাছ উদ্দীন কু:
(র:) এর প্র‌তি‌ষ্ঠিত ৯৭ তম বাৎস‌রিক ওরশ শরী‌ফে মা‌নিকগ‌ঞ্জের ঘিও‌রের
জাবরা ইমাম বাড়ী, দরবার শরীফে প্রথম বা‌রের ম‌তো রান্না হ‌বে এ ডে‌গটি তে।
প্র‌তি বছর শুধু মাত্র ওর‌শে রান্না কর‌তে তৈরা করা হ‌য়ে‌ছে এতো বড়
ডেগ‌টি। ডেগ তৈ‌রি শুরু হওয়ার পর থে‌কেই প্র‌তি‌দিন শত শত মানুষ ডেগ‌টি
দেখ‌তে অাস‌ছে।
 
জানা গে‌ছে, বাংলা‌দে‌শের সব চে‌য়ে বড় প্রায় ৭০০
কে‌জি ওজ‌নের এ ডেগ‌টি তৈ‌রি কর‌তে যে টাকা খরচ হ‌য়ে‌ছে তা দি‌য়ে‌ছে
দরবা‌রের ওরশ ক‌মি‌টি, ভক্ত ও সাধারন জনগন। ২ জন মিস্ত্রী ৩ মাস ধ‌রে তৈ‌রি
ক‌রে‌ছে এ বিশাল অাকৃ‌তির ডেগ।
জাবরা ইমাম বাড়ী দরবার শরীফের
ওরশ ক‌মি‌টির সাংগঠ‌নিক সম্পাদক মো: সাইফুল ইসলাম জানায়, এটি বর্তমা‌নে
বাংলা‌দে‌শের সব চে‌য়ে বড় ডেগ। 
 
ডেগ‌টির উচ্চতা সা‌ড়ে ৬ ফুট । এর মু‌খের
চারপাশের আয়তন ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। অার মাঝামা‌ঝি চারপা‌শের অায়তন ৭ ফিট। ডেক এর
ওপর দিকে মাঝ বরাবর চারকোনে ৪ প্বা‌শে রিং রয়েছে। যার প্র‌তি‌টির ওজন
প্রায় ৪ কেজি করে। ডেকটি স্থানান্তর করার সময় এই রিং এর ভেতর বাঁশ জাতীয়
কোনো কিছু দিয়ে ধরে সরাতে হয়। 
 

ডেকটি স্থানান্তরের জন্য
পূর্ণবয়স্ক ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক লাগে এবং কমপক্ষে ৭১ মন খিচুরি এই ডেক এর
মধ্যে রান্না হ‌বে। ডেক টি‌তে রান্না কর‌তে বি‌শেষ ধর‌নের মোট‌রের তৈ‌রি
মে‌শিন বানা‌নো হ‌য়ে‌ছে। অাবার খাবার ভিতর থে‌কে তুল‌তেও বানা‌নো হ‌য়ে‌ছে
অা‌রেক‌টি য‌ন্ত্র।
 
ওরশ ক‌মি‌টির সাধারন সম্পাদক কাজী মো: খোর‌শেদ জানায়, প্র‌তি‌দিন ডেগ‌টি দেখ‌তে শত শত মানুষ অা‌সে।
‌ডেগটির
ওজন প্রায় ৭শ কে‌জি। ‌ডেগ তৈ‌রি কর‌তে মিস্ত‌ী অানা হ‌য়ে‌ছে ঢাকা থে‌কে। ২
জন মিস্ত্রী‌রির এটি তৈ‌রি কর‌তে সময় লে‌গে‌ছে প্রায় ৩ মা‌সের ম‌তো।
ডেগ‌টি তৈ‌রি কর‌তে ব্যবহৃত হ‌য়েছে ৫ মি‌লি স্টীল এর ১১৩ কে‌জি ক‌রে ওজ‌নের
৫ টি সিট, ঝালা দি‌তে লে‌গে‌ছে ২০ কে‌জি রড, ডেগ‌টির কান‌ধি‌তে ব্যবহৃত
হ‌য়ে‌ছে ১৮ কে‌জির স্টীল, অার ডেগ‌টির চার কো‌নে ১৬ কে‌জি কয়রা লাগা‌নো
র‌য়ে‌ছে।
 
ওরশ ক‌মি‌টির সভাপ‌তি ছি‌দ্দিকুর রহমান ছি‌দ্দিক জানায়,
অাগামী ১৪ সে‌প্টেম্বর থে‌কে শুরু হওয়া ওর‌শে প্রথম রান্না করা হ‌বে
ডেগ‌টি‌তে। ডেক‌টি‌তে রান্না করা যা‌বে, ২১ মন চাল ও ডাল, তৈল, পা‌নি ও
মসলাসহ রান্না করা যা‌বে ৭১ মন। ডেগটা তৈ‌রি করা হ‌য়ে‌ছে শুধু মাত্র ওর‌শের
সময় তবারক রান্না কর‌তে। ডেগ‌টি‌তে ওর‌শের সময় খিচু‌রি রান্না করা হ‌বে।
 

জাবরা
ইমাম বাড়ী, দরবার শরীফের পীর সা‌হেব হযরত মাওলানা খাজা অাবুল কালাম অাজাদ
চিশতী জানায়, আধ্মাতিক ভা‌বে ধ্যান করার সময় ‌তি‌নি এ রকম এক‌টি বড় ডেগ
তৈ‌রির নি‌র্দেশনা পান। প‌রে ভারত উপমহাদে‌শের শ্রেষ্ট অাও‌লিয়া খাজা
মইনু‌দ্দিন হাসান চিশতীর মাজার শ‌রি‌ফের খা‌দেম হযরত খাজা অাহ‌ম্মেদ অালী
চিশতীর নি‌দের্শ ক্র‌মে এই ডেগ তৈ‌রি করা হয়। এটি বাংলাদে‌শের সব চে‌য়ে বড়
ডেগ। এতো বড় ডেগ অার বাংলা‌দে‌শে নেই বলেও তিনি দাবী করেন।
 
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১২ সেপ্টেম্বর/ ২০১৭।
আরো পড়ুুন