শিবালয় প্রতিনিধি, ৮ মে: চার বছর আগে আফরোজা আক্তার হ্যাপিকে বিয়ে করেছিলেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী শাহীদুজ্জামান শাহীন। মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের তাড়াইল গ্রামের মৃত ইশার উদ্দিনের ছেলে শাহীনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল হ্যাপির। হ্যাপি ঢাকার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকার আকতার হোসেনের মেয়ে। তথ্য গোপন করে স্ত্রীর পূর্বের বিয়ের খবরে শাহীন এখন পাগলপ্রায়। এদিকে জমি কেনার কথা বলে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় স্ত্রী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন শাহীন।
গত ৩০ এপ্রিল অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ ওই মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগি শাহীন। ওই দিন দুপুরে আদালতের বিচারক ইয়াসমিন আরা মামলাটি আমলে নিয়ে শিবালয় থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন, শাহীনের স্ত্রী আফরোজা আক্তার হ্যাপি, তার শ্বশুর আকতার হোসেন ও শ্বাশুড়ি রাজিয়া আক্তার। এদের বাড়ি ঢাকার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন সময়ে শাহীনের স্ত্রী হ্যাপি তাদের নিজ এলাকা ডেন্ডাবরে জমি কেনার জন্য শাহিনকে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে শাহীন সিঙ্গাপুর থেকে একেবারেই দেশে চলে আসে। ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শাহিনের স্ত্রী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি জমি কিনে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। টাকা দেওয়ার সময় সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য (বিয়ের ঘটক) শাহীনের ফুপাতো ভাই আবুল হোসেনসহ পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও কয়েকজন আতœীয় স্বজন। টাকা দেওয়ার পর থেকেই শাহীনের স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন জমি কেনার ব্যাপারে টাল বাহানা করতে থাকে। টাকা দেওয়ার প্রায় ৬ মাস পর গত এপ্রিল মাসের ১৩ তারিখে শাহিন কয়েকজন সাক্ষীদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে টাকা চাইতে গেলে তার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে। পুনরায় টাকা চাইলে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি ধামকি দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে শাহীন শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে এসে আদালতের শরনাপন্ন হয়।
ভুক্তভোগী শাহীন জানান, বিদেশ থেকে উপার্জিত সকল অর্থই তিনি স্ত্রীর পেছনে ব্যয় করেছেন। এখন দেশে এসে তিনি অনেকটাই নি:স্ব হয়ে গেছেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
তিনি আরো জানান, বিয়ের পর থেকে হ্যাপি বাবার বাড়ি থেকে আশা ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়তো। বিদেশে থাকাকালীন সময়ে শাহীন তার স্ত্রীর পড়াশোনা ও সংসার খরচ বাবদ প্রতিমাসেই টাকা পাঠাতো। জমি কেনার টাকা নেওয়ার সময় হ্যাপি সাত মাসের গর্ভবতী ছিল। সাড়ে আট মাসে হ্যাপি তার বাবার বাড়িতে জমজ সন্তানের জন্ম দেয়। ওই সময়ও সে তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ পোষনের খরচ চালিয়েছে।
সন্তান জন্মদানের পরই তিনি স্ত্রীর পূর্বের বিয়ের বিষয়ে জানতে পারেন। তার সাথে বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন হ্যাপির পূর্বের বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিল। সেই বিষয়টি তার স্ত্রীকে জানানোর পর থেকেই সে এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার সাথে সর্ম্পক খারাপ করে দেয় এবং জমি কেনার টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে।
শাহীন আরো জানান, ধামরাই থানার আব্দুল জলিল নামের এক ছেলের সাথে ২০০৮ সালে হ্যাপির বিয়ে হয় এবং ২০০৯ সালে তাদের তালাক হয়ে যায়। জলিলের সাথে সংসার করার সময় অন্য একাধিক পুরুষের সাথে হ্যাপির পরকীয়া সম্পর্ক থাকায় জলিল তাকে ডির্ভোস করে। জলিলের সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর হ্যাপির আরো একটি বিয়ের খবর জানা গেছে।
মুঠোফোনে হ্যাপি ও তার পরিবারের লোকজনদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জ২৪/ শিবালয়/ হা.ফ/ ৮ মে ২০১৮।
আরও পড়ুন: