টানা বর্ষনে মানিকগঞ্জে আগাম শীত কালিন সবজি চাষীরা বিপাকে

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী: মানিকগঞ্জে দু’ দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা আগাম শীত কালীন সবজি চাষে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু সম্পতি টানা দুই দিনের ভারী বর্ষনের পানি জমে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।  বৃষ্টির পানি এখনও শীত কালীন সবজির ক্ষেত থেকে না নামায় সবজির চারায় পচন ধরছে। ফলে অনেক কৃষকদের নতুন করে চারা রেপন করায় বাড়তি আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হতে হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গেল বন্যায় মানিকগঞ্জে কৃষকের ৮৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। বন্যায় মানিকগঞ্জে ১৬ হাজার ৬ শত ৩৮ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। এতে ৯৪ হাজার ৫ শত ১৬ জন কৃষক সরাসরি ক্ষতি গ্রস্ত হয়। তাই কৃষকরা বন্যায় ক্ষয় ক্ষতি পোষিয়ে নিতে আগাম শীতকালিন সবজি চাষে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু গেল সপ্তাহের ভারী বর্ষনে এখানকার কৃষকদের মারাত্তক ক্ষতি হয়েছে।

জেলার ৭ টি উপজেলার সাটুরিয়া ও সিংগাইর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশী সবজি চাষ করা হয়। এসব এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত লাল শাক বাজারে উঠতে শুরু করে। আর ধনে পাতা ২ সপ্তাহ গেলেই বিক্রির উপযোগী হত। সিম, লাউ, মূলা, বেগুন, কপি, মরিচ,রসুন, পিয়াজের চারা রোপন করে তা পরিচর্যার কাজে ভীশন ব্যাস্ত সময় পার করছিল এখানকার কৃষকরা। কিন্ত হঠাৎ করে টানা প্রবল বর্ষনে এসব ক্ষেত তলিয়ে যায়।

সাটুরিয়ার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের জান্না গ্রামের আব্দুল মান্নান জানান,  ৮৫ শতাংশ জমিতে আগাম বেগুন ও কপির চারা রোপন করেছিলাম, কিন্তু গেল সপ্তাহের দুই দিনের বর্ষনের পানিতে তলিয়ে যায়। পরে অর্ধেক চারা আবার পূনরায় রোপন করতে হয়েছে।

রাইল্লা গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, ২০ শতাংশ জমিতে লাল শাক রোপন করেছিলাম, দুই দিনের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়, এতে আমার প্রায় ৬ হাজার টাকার লাল শাক পচে গেছে।

একই গ্রামের মুন্তাজ মিয়া জানান, ৪৫ শতাংশ জমিতে মরিচ ও বেগুনের মিশ্র চাষ করেছিলাম, কিন্তু বৃষ্টির পানি টানা ৭ দিন থাকায় তা মরে গেছে। ফলে আমাকে আবার নতুন করে মাঠ তৈরি করতে হবে।

মানিকগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ- সকাকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদের জানান, বর্তমানে মানিকগঞ্জের আগাম শীত কালিন সবজি চারা রোপণ করে পরিচর্যার কাজে ব্যাস্ত ছিল। কিছু এলাকার সবজি বাজারে উঠতেও শুরু করে। কিন্তু গেল সপ্তাহে বৃষ্টির কারনে এখনও অনেক ক্ষেতে পানি জমে আছে। ফলে তাদের আগাম অনেক শীত কালিন সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের  উপ- পরিচালক মোঃ আলিমুজ্জামান মিঞা জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ৭টি উপজেলায় মরিচ, পিয়াজ, রসুন ও ধনিয়া এবং শীতকালীন সবজি মিলে ২৩ হাজার ৪ শত ৭৭ হেক্টর জমিতে লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টানা বর্ষনে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নতুন করে সার ও বীজ সরবরাহ করলে এ ক্ষতি পোষিয়ে নেওয়া সম্বভব। তাছাড়া কৃষকদের  বন্যা ও বর্ষনের ক্ষতি পোষিয়ে নিয়ে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ৬৫ হাজার টাকা প্রনোদনা দেওয়া হবে বলেও জানান কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা।

মানিকঞ্জ২৪/ ২৯ অক্টোবর/ ২০১৭।
আরও পড়ন:

সাটুরিয়ায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ৫

আরো পড়ুুন