প্রেম নয় ক্যারিয়ারে মন দিন, শুধু মেয়ে না মেয়ের বাবারাও পেছনে ছুটবে…

এস.কে.এম. হেদায়েত উল্লাহঃ
প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন? বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ? রিলেশন ব্রেকআপ হয়ে গেছে?চরম মাত্রায় হতাশ? এবার কিছু করবেনই ভাবছেন? নিজেকে শেষ করে দিবেন? একটা মিনিট দাঁড়ান।আমার এই লেখাটা আপনার জন্যই।দয়া করে ৫টা মিনিট সময় দেন।লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।তারপর একটু ভাবুন।তারপর আপনার সিদ্ধান্ত নিন।

আসলে পৃথিবীতে প্রতিটা মানুষ সফলতার পূজারী।আমরা কেউই মানুষকে ভালোবাসি না।কেউই না।আমরা ভালোবাসি হয় মানুষের সৌন্দর্য়কে নয় তার গুণকে নয় তার সফলতাকে আর নয় তার টাকাকে।আশা করি পৃথিবীর কোন ব্যক্তিই আমার এই কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করবেন না।

পৃথিবীতে ৮০-৮৫% যুবক-যুবতী প্রেম করে।সমস্যা সেখানে নয়।সমস্যা হচ্ছে প্রতিদিন অনেক অনেক প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে এবং এরপর দুইটি দিক তৈরী হচ্ছে।(১)যে সকল মানুষের বিপরীতে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায় তারা চরম মাত্রায় ভেঙে পড়ছে এবং খারাপ পথে ধাবিত হচ্ছে,কেউ কেউ আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে,(২)যে সকল মানুষের বিপরীতে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায় তারা প্রতিজ্ঞা করে যে তাকে দেখিয়ে দেবে সে ঠিক কতটা সফল হতে পারে।এর মধ্যে ১ নম্বর অপশন বেছে নেয় ৯৫-৯৮% মানুষ।বাকী ২-৫% মানুষ ২ নম্বর অপশন।যারা ১ নম্বর বেছে নেয় তারা  নিজের জীবনটাকে তো শেষ করে দেয়ই সাথে পরিবারের স্বপ্নও ধূলিসাৎ করে দেয়।কেউ কেউ তো পরিবারই ধ্বংস করে দেয়।তার কর্মধারা হচ্ছেঃব্রেকআপ→নেশা+বাজে আড্ডা→নিজের  টাকার চাহিদা মেটাতে পরিবারে অসহনীয় চাপ+খারাপ কাজে জড়িয়ে যাওয়া→নিজের জীবনশেষ,সাথে পরিবারও। এদের সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই।কিন্তু কেউ যদি ২ নম্বর অপশন বেছে নেয়? তার কার্যধারা হয় এমনঃব্রেকআপ→আত্মবিশ্বাস+পড়াশুনা+পরিশ্রম→সফলতা→নিজেও সুখী,পরিবারও সুখী।
আর যার সাথে সম্পর্ক ভেঙে গিয়ে ছিল সেই আপনার কাছে ফিরে আসবে যদি উপায় থাকে আর নইলে আফসোস করবে।বিশ্বাস হচ্ছে না।তবে একটা ঘটনা শেয়ার করি।

আমার পরিচিত একজন ভাই আছেন , যিনি তার পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একই মেয়েকে মোট সাতান্নটা চিঠি দিয়েছিলেন ;যার একটা জবাবও তিনি পাননি । ক্যাম্পাসে যতবার তার সাথে মেয়েটির দেখা হত ততবার কোন এক জটিল চিন্তা মেয়েটির মাথায় ভর করত আর উদাস মেয়েটি অন্য কোন দিকে তাকিয়ে ভাব দেখিয়ে তার পাশ দিয়ে হেঁটে যেত । পাস করার পর অনেক জায়গায় অনেক চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে জুতোর আয়ু খরচ করেছেন , লাভ হয়নি । পুরো দুনিয়ার কাছে তিনি কিছুই না ।

..
তারপর ধুপ করে একদিন তিনি জানতে পারেন তিনি এখন থেকে আর সাধারণ কেউ নন , হয়ে গেলেন অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার অব পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ , সোজা কথায় ম্যাজিস্ট্রেট। ব্যস , সবকিছু কেমন বদলে গেল । বন্ধুদের আড্ডায় তাকে বন্ধু আর স্যার স্যার টাইপ ট্রীট করা বেড়ে গেল । যে মেয়েটা চিঠির জবাব দিতো না সে ও “Congrats vaiya, I am so happy!” লিখে মেসেজ দিতে শুরু করলো । আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খালি চা এর বদলে সাত আট পদের খাবার আসতে লাগলো । আরো কত কি….

.
দ্রুত ঘোর কেটে ছেলেটা নিজের অতীত জীবনকে একবার রিওয়াইনড করে জুম করে দেখে নিল । সাতান্নটা চিঠি যে কাজ পারলো না , একটা পদবী সে কাজটা যে শুধু করে দিল তাই না , বরং বলতে গেলে প্লেটে করে সামনে এনে হাজির করে দিল ।

উপদেশঃ অন্য সব চিন্তা বাদ দিয়ে আগে তুমি তোমার লাইফের ফোকাসটা ঠিক করো , অ্যাডিশনাল কোন ফ্যাক্টর কখনো ফোকাস হতে পারে না । শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে একটা জীবন কখনোই সাজানো সম্ভব না । বৃষ্টিতে শখ করে ভেজা আনন্দের হতে পারে, তবে বাধ্য হয়ে ছাতার অভাবে ভেজা কষ্টের , ভয়ংকর কষ্টের । তোমার কাছে যখন মধু থাকবে তখন অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী তোমার খোঁজ খবর নিবে , ভালো মন্দ জানতে চাইবে । এগুলোর অ্যাটিওলজী তুমি না , তোমার কাছে থাকা মধুটা । তাই নিজের কাছে থাকা এই মধুর ডিব্বাটার যত্ম নিও ।.


(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

মনেরেখ , ভোমরার অভাব না থাকতে পারে পৃথিবীতে ,মধু কিন্তু সবার কাছে থাকে না । কষ্ট করলে ঐ মধু সংগ্রহের জন্য করো , আশে পাশের ভোমরা গুলাকে আটঁকে রাখতে করো না ।
জীবনটাকে ২ টাকার নোট ভেবো না।তোমার নিজের কথা বাদ দাও।তোমার জন্মদাতা পিতামাতার কথা ভাবো।তোমার জন্য তারা কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা ভাবো।তুমি খারাপ হলে বা তুমি কিছু করে ফেললে তারা কতটা কষ্ট পাবে তা ভাবো।যার জন্য এটা করতে যাচ্ছো,সে কে? তোমার বাবা-মার চেয়েও কি সে বেশি কিছু।যদি তাই হয়ে থাকে তবে বলবো তুমি মানুষ নয়।হয় রোবট নয় পশু।অন্যের জন্য নিজের আর নিজের পরিবারের স্বপ্নকে হত্যা করো না।
আর একটা কথা মনে রেখো,
বিজয়ীরা কখনো স্বপ্ন ত্যাগ করে না,
স্বপ্নত্যাগকারীরা কখনো বিজয়ী হয় না।

এস.কে.এম. হেদায়েত উল্লাহ্
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ(দ্বিতীয় বর্ষ)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মানিকগঞ্জ২৪.কম/এস.কে./২৮.২.২০১৮।
আরও পড়ুন:

হাসান ফয়জী জেলার শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা নির্বাচিত

আরো পড়ুুন