এস.কে.এম. হেদায়েত উল্লাহ্ঃ
সৌরভ আহমেদ।দারুণ মজার একজন ছেলে।মানিকগঞ্জ শহরে বেড়ে ওঠা সৌরভ পড়ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারে।বন্ধুদের আড্ডা মাতিয়ে তোলার জন্য সে একাই যথেষ্ট।একদিন আড্ডার ফাঁকেই মানিকগঞ্জ২৪.কম কে সাক্ষাৎকার দিলেন নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ও মানিকগঞ্জ জেলার শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে।সেইসাথে চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য উপদেশও দিলেন।মানিকগঞ্জ জেলা থেকে চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য তা তুলে ধরা হলোঃ
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
-কেমন আছেন?
– আলহামদুলিল্লাহ্
-কেমন কাটছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন?
– আলহামদুলিল্লাহ্।এ বিষয়টা বলে বোঝানোর নয়।
-দেশের অন্যতম সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন,অনুভূতিটা কেমন?
– আলহামদুলিল্লাহ্।অবশ্যই ভালো।
-কীভাবে পড়াশুনা করেছেন ভর্তি প্রস্তুতির জন্য?
– একবাক্যে যদি বলি,ভাগ্য ছাড়া কেউ যেনো ঠেকাতে না পারে।
-আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে,মানিকগঞ্জ থেকে তুলনামূলক অনেক কম শিক্ষার্থী মেডিকেল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাচ্ছে,আপনার মতে এর কারণ কি?
– হুম তা অনেকটাই সত্য ৷ ঢাকা শহরের এতো কাছের একটি জেলা হয়েও এখান থেকে মেডিকেল বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ৷ আমার মনে হয় এর কারন হতে পারে মেডিকেল বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা ৷ আমি নিজের কথাই বলবো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ সুবিধা বা এখানে ভর্তির নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমার স্পষ্ট ধারনা হয় এইচএসসি পরীক্ষার পরে যখন আমি ঢাকায় কোচিং করতে যাই ৷ কোচিং এ যাওয়ার পরে আমি বুঝতে পারি যে এসব বিশ্ববিদ্যালয় কতরকম সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে ৷ শিক্ষাজীবনের আগের বারো বছরে আমার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর নাম আর কিছু ছবি দেখা ছাড়া তেমন কোন ধারনাই ছিলো না ৷ তাই আমি প্রস্তুতি নেওয়ারও যথেষ্ট সময় পাইনি ৷ ঢাকায় এসেই আমি বুঝতে পারি যে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রতিযোগীতা কতটা কঠিন ৷ কিন্তু সে তুলনায় ঢাকায় বা তার আশেপাশের অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কে ধারনা অনেক আগে থেকেই থাকে ৷ যার কারনে তারা অনেক আগে থেকেই এ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনের একটা প্রস্তুতি নিতে পারে, ফলাফলও ভালো হয় ৷ আমার মনে হয় এই তথ্যের স্বল্পতাই মানিকগঞ্জের শিক্ষার্থীদের বড় দূর্বলতা ৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
-আপনার মতে এ থেকে উত্তরণের উপায় কি হতে পারে?
– আমরা যারা লোকাল সরকারী স্কুল কলেজে পড়াশোনা করেছি তাদের বেশিরভাগই পরিবার থেকেও উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে তেমন একটা নির্দেশনা পাই না ৷ আমাদের সেই গতানুগতিক ক্লাসে ফার্স্ট সেকেন্ড হওয়ার প্রতিযোগীতাতেই পরে থাকতে হয় ৷ শিক্ষার্থীদের প্রাইমারী থেকে এসএসসি পর্যন্ত যদি এই ক্লাসের গন্ডি থেকে বের করে বাইরের স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায় তবে আগে থেকেই তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার একটা স্বপ্ন জেগে উঠবে ৷ তাছাড়া একাদশ আর দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের যদি আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ার স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া যায় তবে সেটা অনেক কাজে দিবে ৷ তাছাড়া এখানকার স্কুল কলেজ থেকে যদি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষাসফরে নেওয়া যায় তবে সেটাও তাদের যথেষ্ট অনুপ্রেরনা দিবে ৷
-ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রস্তুতি নেয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
– কিভাবে পড়াশোনা করবে সেটা শিক্ষার্থীর নিজের ব্যাপার ৷ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার যথেষ্ট তথ্য আর চান্স পাওয়ার প্রবল ইচ্ছা থাকলে সে নিজেই বুঝতে পারবে যে তার কিভাবে পড়া দরকার ৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
-এক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?
– আগে যেটা বললাম, সন্তানদের শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই তাদের স্কুল কলেজের বাইরের দুনিয়ার সাথে পরিচয় করাতে হবে ৷ আর এ কাজটা অবশ্যই তার অভিভাবকদের ৷ তারা চাইলেই তাদের সন্তানদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায়, মেডিকেল বা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারনা দিতে পারে, বা তাদের সেসব ক্যাম্পাসে বেড়াতেও নিতে পারেন ৷ অন্ততপক্ষে সন্তানদের যদি বছরে একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একুশে বই মেলাতেও নেওয়া হয় তাতেও তারা অনেক কিছু শিখতে পারবে, জানতে পারবে ৷
-বর্তমান অভিভাবকমাত্রই চান তার সন্তান ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে। এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
– এটা তো অবশ্যই খারাপ ৷ ছোটবেলা থেকেই সন্তানের উপর কোনকিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবেনা ৷ গতানুগতিক শিক্ষা ব্যাবস্থার যেহেতু বিকল্প এখনো নেই, তো সন্তানদের এসবের পাশাপাশি অন্যান্য এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি বা খেলাধুলায়ও উৎসাহ দিতে হবে ৷ আর যেটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ন সেটা হচ্ছে বই পড়া ৷ আমাদের শিক্ষার্থীদের শুধুই তার পাঠ্য বই পড়তে বা মুখস্ত করতে বাধ্য করা হয় ৷ এটা কোনভাবেই করা যাবেনা ৷ পাঠ্যবইয়ে যতটুকু শেখা দরকার তা শিখলেই হবে ৷ তার পাশাপাশি ভালো ভালো লেখকের লেখা জ্ঞানমুলক বা সাহিত্যের বইগুলোও পড়তে হবে ৷ আসলে শেখাটাই আসল, আজ ক্লাসে ফার্স্ট সেকেন্ড হলে সেটা একচুয়ালি পরে কোন কাজেই আসবে না ৷
-হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে সাবজেক্টটিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?একজন শিক্ষার্থীর কেন হিসাববিজ্ঞান পড়া উচিত পড়া উচিত?
– সাবজেক্ট নিয়ে কথা বলবো না ভাই ৷ যথেষ্ট চাপে আছি ৷ তবে স্কুল থেকেই যেহেতু বিজনেসে পড়ছি তো হিসাববিজ্ঞান আগে থেকেই প্রিয় ৷ আর প্রিয় জিনিস নিয়ে একটু চাপে থাকা খারাপ নাহ্ ৷
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
-ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ কোন কথা?
– মনে যদি শতভাগ ইচ্ছা থাকে চান্স পাওয়ার, তবে চান্স তুমি পাবেই ইনশাআল্লাহ্ ৷ তারপর ক্যাম্পাসে এলে তো দেখা সাক্ষাত হবেই,বাকী আলাপ না হয় সে সময়ের জন্যই রেখে দিলাম।
-আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
-আপনাকে এবং মানিকগঞ্জ২৪.কম কেও ধন্যবাদ।
মানিকগঞ্জ২৪.কম/এস.কে./২২মে/২০১৮/মঙ্গলবার।