সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ৫ এপ্রিল:
গাজীখালী নদী ছিল একসময় প্রমত্তা স্রোতস্বিনী। চলত বড় বড় নৌযান।
নৌসুবিধার কারণেই এর তীরে গড়ে ওঠে হাটবাজার ও নানা প্রতিষ্ঠান। সাটুরিয়ায়
হাটও বসে এ নদীকে ঘিরে। শত শত নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমার একসময় নোঙর করত এ নদীর
সাটুরিয়া ঘাটে। এখন নদীটি মরতে বসেছে। অবহেলায় নদীটির সংযোগ মুখ পলিতে ভরে
গেছে। বর্ষায়ও পানি আসে না অনেক বছর। দখল-দূষণ ও ভরাটে গাজীখালী নদীটি এখন
মৃতপ্রায়। এর অবস্থা উন্নয়নেও কারও ভূমিকা দৃশ্যমান নয়।
গাজীখালী ধলেশ^রী নদীর গোপালপুর এলাকা থেকে উৎপত্তি। সাটুরিয়ার দরগ্রাম ও
হরগজ ইউনিয়ন হয়ে সাটুরিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ধামরাই উপজেলার বাথুলী থেকে
পুনরায় ধলেশ^রীতে মিশেছে। এ নদীটি ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলার উল্লেখযোগ্য
প্রধান নদী।
সাটুরিয়ার ব্যবসায়ীরা বলেন, এ উপজেলার উৎপন্ন পণ্য নৌপথেই দেশের
অভ্যন্তরে ও বাইরে পাঠানো হতো। একইভাবে আনাও হতো এ পথে। ২০০৪ সালে বন্যার
পর এ নদীতে কোনো নৌযান চলতে দেখা যায়নি। হাটের দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত
থেকে কয়েক শত নৌকা ও ট্রলার ভিড়ত এ গাজীখালী নদীর তীরে। এখন ২০-২২ বছর এ
নদী দিয়ে নৌকাসহ কোনো নৌযান চলে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, ধলেশ^রীর শাখা
থেকে গোপালপুর থেকে শুরু হয়ে সাটুরিয়া পর্যন্ত ৮-১০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটি
দখল হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। নদীর তীর দখল করে উঠেছে শত শত পাকা বাড়ি।
সাটুরিয়া হাট ও হাসপাতাল এলাকায় শতাধিক বাড়ি গড়ে উঠেছে নদী দখল করে।
হরগজের একাধিক স্থানে নদীর তলদেশ ও গোপালপুরে সংযোগমুখ মাটিতে ভরে গেছে।
সংযোগ মুখ উঁচু হওয়ায় গাজীখালী নদীতে পানি প্রবেশে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।
অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করলে কয়েক বছর পর বিলীন হয়ে যেতে পারে গাজীখালী
নদী।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বসির উদ্দিন ঠান্ডু বলেন,
‘এলাকায় অনেক উন্নয়নের কাজ হলেও নদী দখল রোধ ও খননকাজ কেন হচ্ছে না তা আমি
বুঝতে পারছি না। তাই গাজীখালি নদীটি মরতে বসেছে।’
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন পারভীন বলেন, গাজীখালী নদী
খননকাজের জন্য একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নৌ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো
হয়েছে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ৫ এপ্রিল ২০১৯।