আপেল মাহমুদ চৌধুরী: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নেই
তামাক চাষে ঝোঁকে পরেছে কৃষকরা। বেশী লাভের আশায় কৃষকরা মানবদেহের ক্ষতি
না ভেবে ও অন্যন্য সকল আবাদী ফসল চাষ কমিয়ে তামাক চারা রোপনের কাজে ব্যস্ত
সময় কাটাচ্ছেন। অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যাবহারের কারণে প্রতি বছরই গবাদি পশুর
মৃত্যু হচ্ছে ওইসব ইউনিয়নে। আর তামাক চাষে এক শ্রেণির তামাক কোম্পানির
এজেন্টরা কৃষকদের বেশী লাভ দেখিয়ে তামাক চাষে উৎসাহিত করার অভিযোগ পাওয়া
গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী,
বরাইদ, হরগজ, দিঘুলীয়া, ফুকুরহাটি ও দড়গ্রাম ইউনিয়নে সাধারণ কৃষকরা তামাক
কোম্পানির কাছ থেকে টাকা দাদন নিয়ে তামাক চাষ করছেন। ইতি মধ্যে সকল প্রকার
আবাদী ফসল চাষ কমিয়ে দিয়ে তামাক রোপনের কাজে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে
পরিবারের সদস্যরা।
অন্যদিকে তামাক চাষের কারণে জমির
উর্বরতা নষ্টসহ এলাকার মানুষ নানা ধরনের কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
অতিরিক্ত তামাক চাষে কারনে আবাদী জমি সহ পরিবেশবান্ধব সকল উপকরন নষ্ট
হচ্ছে। যাহা পরিবেশ মতে মানব দেহের জন্য খুবই ঝুকিপুর্ণ। এই তামাক চাষ করতে
প্রচুর পরিমান রাসায়নিক সার ও র্কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ক্ষেতে বারতি অনেক
আগাছা ঘাস জন্মায়। এসব আগাছা ঘাস খেয়ে প্রতি বছরই গবাদী পশুর মৃত্যু হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ওইসব এলাকায় প্রায় ২শতাধিক গবাদী পশু তামাক ক্ষেতের ঘাষ খেয়ে
মৃত্যু হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
বরাইদ ইউনিয়নের
গোপালপুর গ্রামের মো. ছত্বর মিয়ার ছেলে মো: নুরু মিয়া বলেন, এই তামাক চারা
ছোট থেকে বড় করা পর্যন্ত পাতা বাড়িতে আনার পর আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ি। তবে
তামাক চাষ লাভ জনক হওয়ায় তারা বিভিন্ন তামাক কোম্পানির কাছ থেকে চাষের জন্য
এক বছর আগেই দাদন নিয়ে থাকেন। একই গ্রামের মো. হানিফের ছেলে মো. রহমান
বলেন, তামাক পাতা চাষে এবং পরে তোলার সময় হাত পায়ে ঘাঁ হয়ে যায়। তামাক পাতা
রোদে শুকানো যায় না ফলে ঘরের মাচা, বারান্দা, চালের বেড়াসহ বিভিন্ন স্থানে
তামাক পাতা শুকাতে হয়। তখন বাড়িসহ আশে পাশে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
তিল্লী
ইউনিয়নে চর তিল্লী গ্রমের মো. আম্বর উদ্দিনের ছেলে মো. জামাল উদ্দিন
জানান, এই তামাক পাতা বাচাই করার সময় আমার বাড়ির সকল সদস্য অসুস্থ্য হয়ে
সাটুরিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। এর পরেও বেশি মুনাফা পাওয়ার কারণে
তামাক চাষ করে থাকি।
এই বিষয়ে বরাইদ ইউনিয়নের উপ- সহকারী
কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, কৃষকদের তামাক চাষে আমরা
নিরোৎসাহিত করছি। তবে আশা করি ধীরে ধীরে তামাক চাষ কমে যাবে।
সাটুরিয়া
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এমদাদুল হক জানান, এ উপজেলায় নদীমাতৃক এলাকা
হওয়ায় তামাক চাষের পরিমানটা একটু বেশি। ইতি মধ্যে ৪৩২ হেক্ট্রর জায়গাতে
তামাক চাষ শুরু হয়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় এবার ১৬ হেক্ট্রর জমিতে তামাক
চাষ কম হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকারি বিভিন্নভাবে তামাক চাষ না করার জন্য
কৃষকদের নিরোৎসাহিত করা হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ আ. চৌ./ ১১ ডিসেম্বর/ ২০১৭।
আরও পড়ুন: