মোহাম্মদ হাসান ফয়জী: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার হারুকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ব্রীজ উদ্বোধনের আগেই ভেঙ্গে গেছে। ফলে হারুকান্দির ৬ টি ওয়ার্ডের ৮টি গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ধূলশুরা ইউনিয়নের ২টি ওয়ার্ডের ৩ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, হারিরামপুর উপজেলার হারুকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ডোবার উপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৪ ফিট প্রস্থ ও ৬০ ফিট দৈর্ঘ্য একটি ব্রীজের টেন্ডার আহবান করা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এই কাজটি পায় চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ। চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ অত্যন্ত নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে ব্রীজের কাজ করেন। ফলে বিগত বছরের বন্যার সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে যায়। এর পর থেকেই সীমাহিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েকটি গ্রামের হাজারও মানুষের।
এ ব্রীজটি নির্মাণ হওয়ার পর উদ্বোধনের আগে ভেঙ্গে যাওয়ায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শত শত ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষর্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে অতিরিক্ত সময়ও লাগছে।
এ ব্যাপারে হারুকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চুন্নু বলেন, এ ব্রীজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ সড়ক দিয়ে ১২ টি গ্রামের মানুষ, ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। এছাড়াও, ক্লিনিকসহ নানা স্থাপনা রয়েছে এ সড়ক পথেই। হাজার হাজার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ব্রীজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কে নিষেধ সত্ত্বেও বন্যার সময় ব্রীজটির নির্মাণ কাজ করেন। ফলে বিগত বছরের বন্যার সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে যায়।
দক্ষিণ চাঁদপুর এলাকার বুকুল রায় জানান, পদ্মার চড়ে হাজার সমস্যা কবলিত এলাকা এটি। এ ব্রীজটি ব্যবহার না করার কারণে রাত বিরাতে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে রোগী নিয়ে উপজেলা সদর ও জেলা শহরে আসতে নিদারুণ কষ্ট করতে হয়।
পার্শ্ববর্তী ধূলশুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, এ এলাকা চড় হওয়ায় এখানকার পণ্য সামগ্রি হাটবাজারে নিতে গিলে বাড়তি টাকা ছাড়া যায় না যানবাহন শ্রমিকরা। ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দক্ষিণ চাদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদ হাসান বলেন, আমার বিদ্যালয়ের প্রায় ১৫০ শিক্ষার্থী ঐ ব্রীজের সড়ক দিয়ে আসতে হয়। তাছাড়া দক্ষিণ চাঁদপুর বিচারপ্রতি নূরুল ইসলাম মহাবিদ্যালয়, দক্ষিণ চাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও যাতায়াত ব্যহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে এ ব্রীজটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর আব্দুল কাদের ব্রীজটির নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিগত বন্যার সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরিবাধ ভেঙ্গে তীব্র স্রোতে ব্রীজটি ভেঙ্গে গেছে। তিনি আরো বলেন, ৬০ ফিটের বদলে ১২০ ফিট এবং আরসিসি করে ব্রীজটির ডিজাইন করলে নদীর স্রোতে ব্রীজটি নাও ভাঙ্গতে পারত।
হরিরামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ৫৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফিট দৈর্ঘ্যরে ব্রীজটি উদ্বোধনের আগেই গত বছরের বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ কে জানালে সরেজমিনে এসে তদন্ত করে গেছেন। তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ২৪/ ১৪ ফেব্রুয়ারী/ ২০১৮।
আরও পড়ুন: