মানিকগঞ্জে বন্যায় মৎস্য সম্পদে ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি


মোহাম্মদ হাসান
ফয়জী: চলতি বন্যায় মানিকগঞ্জে মৎস্য সম্পদে ১০ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলার ৭টি উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নের ২ হাজার ৭ শত ২৫ টি পুকুর ডুবে গিয়ে ১ হাজার ৯ শত
১২ জন মৎসজীবী আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হয়েছে।

জেলার যে সমস্ত
মৎস চাষীদের পুকুর ডুবে পার ভেঙ্গে গিয়েছিল তারা এখন পুকুরের পার মেরামত ও পানি দুষন
মুক্ত করার কাজে ব্যাস্ত সময় পাড় করছেন। আর পুকুরে চাষকৃত মাছ ও পোনা বানের পানিতে
ভেষে গিয়ে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মৎস চাষীরা ।
মানিকগঞ্জ জেলা
মৎস অফিস জানান, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ১ হাজার ১ শত ১০ পুকুর, শিবালয় উপজেলার ৫ শত,
সিংগাইর উপজেলার ৪০, ঘিওর উপজেলার ২৩৫,  সাটুরিয়া
উপজেলার ১১৩, হরিরামপুর উপজেলার ৬১৪, দৌলতপুর উপজেলার ১১৩ টি সহ মোট ২ হাজার ৭ শত ২৫
টি পুকুর বন্যার পানিতে ডুবে যায়। 

এত ৪৭৬ হেক্টর
জমির পুকুর ক্ষতি গ্রস্ত হয়ে ৬৭ লক্ষ পোনা মাছ ও ৫১৯ মেঃ টন বড় মাছ বানের পানিতে ভেষে
গিয়ে মোট ১০ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জেলার সবচেয়ে
বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানিকগঞ্জ সদর ও হরিরমাপুর উপজেলার মৎস চাষীরা। এ দুই উপজেলার
অধিকাংশ পুকুরই বানের পানিতে তলিয়ে যায়।

হরিরামপুর উপজেলার
হারুকান্দি গ্রামের মৎস চাষী ইয়াকুব আলী জানান, ২ লক্ষ টাকা ঋণ করে ২ টি পুকুর মাছ
চাষ শুরু করি, ১ মাসের মধ্যেই আমার ২টি পকুরই বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। কিভাবে এ ক্ষতি
পুষিয়ে উঠব বুঝতে পারছিনা।
একই উপজেলার চালা
ইউনিয়নের মৎস চাষী জামাল জানান, ৩ টি পুকুরই বন্যার পানিতে তলিযে গেছে। ১ম দফা বন্যায়
৭০ হজার টাকার ঝাল দিয়ে পুকুর ঘেরাউ করে ছিলাম। কিন্তু ২য় দফা বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে।

হরিরামপুর উপজেলার
গালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শফিক বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নে ব্যাবক ক্ষতি গ্রস্ত
হয়েছে মৎস চাষীরা । সরকার কৃষকদের ঋণ সুবিধা দিলেও মৎস চাষীদের বেলায় তা করে না । আমি
প্রশাষনের নিকট অনুরুধ করব মৎস চাষীরা যাতে ক্ষয় ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে তার জন্য ঋণের
 ব্যবস্থা করে।
শিবালয় উপজেলার
উলাইল ইউনিনের মৎস চাষী রফিক মিয়া জানান, তার ১টি পকুর ৯০ হাজার টাকা দিয়ে কটে রাখেন।
দেড় লক্ষ টাকা পরিমাণের মাছ ছিল সব বন্যার পাতিতে ভেষে গেছে। বন্যার পানি কমার পর পুকুর
ঝাল টেনে দেখি শুধু রাক্ষসি মাছ। এখন পুকুরে যে মাছ আছে তা ঐ রাক্ষসি মাছ ক্ষেয়ে ফেলছে।
তাই পুকুর আবার নতুন করে পরিস্কার করে মাছের পোনা ছাড়তে হবে। প্রচুর রাক্ষসি মাছ থাকায়
আরও ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হচ্ছি।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ
জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ নূরতাজুল হক জানান, মানিকগঞ্জে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। তাই
যে সমস্ত পুকুর এর আইল জেড়ে উঠছে, সেই সমস্ত মৎস চাষীদের পুকুর কিছু মাছ থেকে থাকলে
চুন দিয়ে পানি দুষিত মুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছি।
তিনি আরো জানান,
আমরা আগষ্ট মাসেই জেলার ক্ষতি গ্রস্ত মৎস চাষী, পুকুর ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করে
উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছি। যদি কোন ঋণ সুবিদা আসে তাহলে উপজেলা ভিত্তিক বরাদ্ধ
দেওয়া হবে বলেও জানান ঐ মৎস কর্মকর্তা।
মানিকগঞ্জ২৪/
হা.ফ/ ৭ সেপ্টেম্বর/ ২০১৭।
আরো পড়ুুন