সাটুরিয়ায় ইউএনওর হস্তক্ষেপে নদীর উপর অবৈধ বাঁধ অপসারণ

সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ৪ ডিসেম্বর:

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম সাটুরিয়া উপজেলার বুকচিড়ে বয়ে যাওয়া গাজিখালী নদীর উপর অবৈধ বাঁধ অপরাসারণ করেছেন। এতে সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামের নদীর উৎস মুখ থেকে ১২ কিলোমিটার নদী পথ ছাড়াও বালিয়াটী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার কৃষকেরা উপকৃত হয়েছেন।

বালিয়াটী ও সাটুরিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা বাঁধটি অপসারণের দাবীতে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলমের নিকট গত বুধবার (২ ডিসেম্বর) একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি পেয়েই বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে বাঁধটি অপসারণের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে মৌখিক ভাবে বলে আসেন। আর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানও কথা মত ঐ দিনই বিকেলেই বাঁধটি অপসারণ করেন। এতে হাজার হাজার কৃষকের বোরো বীজতলা রক্ষা পেল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাটুরিয়া গাজীখালি নদী খনন চলছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নদী খননের সুবিধার্থে  গাজিখালি নদীর সাটুরিয়া ইউনিয়নের বাছট – বৈলতলা গ্রামের অংশে নদী মাঝ বরাবর বাঁধ দিয়ে রাখেন। সাটুরিয়া উপজেলার ১২ কিলোমিটার নদী পথ, বালিয়াটী ইউনিয়নের চন্দ্রখালি খালের কয়েক কিলোমিটার পারের কৃষক বেকাদায় পড়েন। এ নদী খাল ঘেষে কৃষকরা বোরো বীজতলা রোপণ করেন। কিন্তু বাঁধের কারনে সে বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হচ্ছিল। আবার অনেক ক্ষেত থেকে পানি না নামায় বোরো ধানসহ অন্যান্য শস্য রোপণ করতে পারছিল না।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া জাতীয় পদক প্রাপ্ত কৃষক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আ খ ম নূরুল হক বলেন, বাছট গ্রামের নদীর উপর এ বাঁধের কারনে শুধু সাটুরিয়া উপজেলা ছাড়াও ধামরাই উপজেলার এক অংশের কৃষকরা ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছিল। বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তাছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলেও কোন কোন স্থানে অতিরিক্ত পানি জমে চলাচল মারাত্বক ব্যাঘাত ঘটছিল। সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগ পেয়েই ঐ দিনেই বাঁধটি অপসারণ করায় হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছে।

এ ব্যাপারে বালিয়াটী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন বলেন, বাঁধটি সাটুরিয়ার অংশে দিলেও এর প্রভাব পড়ে আমার হাজিপুর, বাহ্রা ও বনমালিপুর গ্রামের শত শত কৃষকের। করোনা ও বন্যার কারনে কৃষকরা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এ বাঁধটি আবার মরার উপর খরার ঘা ছিল। বাঁধটি অপসারণের ফলে কৃষকদের অনেক দিনের দাবী পূরণ হয়েছে।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশাফুল আলম বলেন, গাজিখালি নদীর উপর নদী খননকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অবৈধ বাধঁটি অপসারণের জন্য লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা সমাধান করেছি। সাটুরিয়া উপজেলার আরও কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার কারনে কৃষকরা ঠিকমত জমি চাষ করতে পারছেন না। এতে শত শত হেক্টর জমি অনাবাদি রয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জমি পতিত রাখা যাবে না। বাকী নদী ও খাল খননসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে সামনে প্রকল্প চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবেও বলে জানান সাটুরিয়া উপজেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তা।

মানিকঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ৪ ডিসেম্বর ২০২০।

আরো পড়ুুন