সিংগাইর উপজেলা প্রশাসনে বদলি আতংক

সিংগাইর প্রতিনিধি:  মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা প্রশাসনে অফিস ফাঁকির অভিযোগে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের ১৩ কর্মকর্তাকে বদলীর জন্য তালিকা করায় সর্বত্রই আতংক বিরাজ করছে। এর মধ্যে ১৩ জনের মধ্যে ৬ কর্মকর্তাকে অফিস ফাকি দেওয়ার অভিযোগ প্রমানীথ হওয়ায় অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। বাকি ৭ জনের মধ্যে ৫ কর্মকর্তা অফিস ফাঁকির অভিযোগ এড়াতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত আবেদন করেছেন।

এ নিয়ে সিংগাইর উপজেলার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও বদলী আতংক বিরাজ করছে। তবে বহুল আলোচিত উপজেলা প্রকৌশলী ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এখনও রয়ে গেছেন ধরা-ছোয়ার বাইরে।

সিংগাইর উপজেলা রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী হওয়ায় অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এ উপজেলায় যোগদান করে থাকেন। যাতে তারা ঢাকা কিংবা সাভার বাসা নিয়ে অফিস করতে পারেন।  কিন্তু এসব কর্মকর্তারা কর্মস্থলে যোগদান করেই অফিস ফাঁকি দেওয়া শুরু করে। এক পর্যায় তা মারাত্তক আকার ধারণ করে।

সিংগাইর উপজেলার কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ও অনিয়মের সুযোগ দেখে তাদের অধিনস্থ কর্মচারীরাও অফিস ফাকিতে মেতে উঠেন। এতে উপজেলাবাসী কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিতসহ দাপ্তরিক সেবা পেতে হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে।

এ অফিষ ফাকি নিয়ে কয়েকটি সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে  দৃষ্টি পড়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিভিন্ন সময় সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের প্রেক্ষিতে কর্মকতাদের অফিস ফাঁকির সত্যতা মিলে।

পরে এ উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত ১৩ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে তালিকা করা হয়। ইতিমধ্যে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মেহেদী আক্তার, সাব-রেজিষ্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান, হিসাব রক্ষন অফিসার সুধির চন্দ্র হালদার, খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মোঃ দিলদার মাহমুদ, মৎস্য সম্প্রসারন কর্মকর্তা অর্পনা বর্মন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সহকারি প্রোগ্রামার মোঃ শাকিল আহমেদকে বদলী করা হয়েছে।

ওই তালিকায় থাকা  ৭ জনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাঝে বিরাজ করছে বদলী আতংক। এর মধ্যে সমবায় অফিসার আখিনুর ইয়াসমিন, যুব উন্নয়ন অফিসার মতিয়ার রহমান মন্ডল, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম, প্রানী সম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ মাহবুবুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সেকেন্দার আলী মোল্লাহ স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বরাবর তাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।

অপর দিকে উপজেলা প্রশাসনের বহুল আলোচিত কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক একই কর্মস্থলে ৯ বছর যাবত আছেন বহাল তবিয়তে। তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনও কর্মরত আছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকিসহ নানা অনিয়নম-দুর্নীতি অভিযোগ রয়েছে।

সিংগাইর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম আবু ওবায়দা আলী ও সহকারি শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামান খান এবং সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকিসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ফলে তারাও রয়েছেন বদলী আতংকে। 

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. যুবায়ের জানান, ১৩ জন কর্মকর্তাদের যে অফিস ফাকির তালিকা করা হয়েছে। এখানে অনেক কতিপয় দায়ী কর্মকর্তারা বাদ পড়েছেন আবার নিরপরাধ কর্মকর্তারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন। তাই এ বিষয়ে পূনরায় তদন্ত করার প্রয়োজন।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৪ অক্টোবর/ ২০১৭।
আরও পড়ুন:

সাটুরিয়ায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ৫

আরো পড়ুুন