শুরুর দিকে দিনে ১০ টাকা নিয়ে বাড়ী যেতাম- লাইলি আক্তার

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী : কাজ করার শুরুর দিকে দিনে ১০ টাকা নিয়ে বাড়ী যেতাম। সারা দিন বসে থাকতাম, মাঝে মাঝে একটা কাষ্টমার আসতা আমার সেন্টারে। লাল চা আর টুচ বিস্কুট খেয়ে লাঞ্চ করে খালি হাতে বাড়ী ফিরতাম। তবুও হাল ছাড়ি নাই। আর এখন আমার টাকায় সংসারের চলে। কথাগুলি বলছিলেন মানিকগঞ্জের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের একজন সফল নারী উদ্যোক্তা লাইলি আক্তার।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চর আজিমপুর গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছোট মেয়ে লাইলি আক্তার (২৫) একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জেলা জুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ২০১০ সালে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের কার্যক্রম শুরু হয় সমগ্র দেশে। প্রতিটি সেন্টারে একজন করে পুরুষ ও নারী উদ্যোক্তা নেওয়া হয়। সব ইউনিয়নে যখন পুরুষ উদ্যোক্তার ছড়া ছড়ি সেখানে সিংগাইর উপজেলার সদর ইউনিয়নে লাইলি আক্তার নারী উদ্যোক্তা হিসেবে যোগদান করেন।

লাইলি আক্তার বলেন, ২০১০ সালে একটি কম্পিউটার আর কিছু মালামাল দিয়ে আমার (ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র) তৎকালীন নাম যোগদান করি। পরিষদের নিজস্ব কোন ভবন না থাকায় একটি ভাড়া টিন সেডে আমার যাত্রা শুরু করি। ৫-৬ মাস টানা ১০-২০ টাকা আয় হত। মানুষ বুঝতা না তথ্য সেবা কি । এমন দিনও গেছে একটি টাকাও আয় হত না। বাকী তে লাল চা আর টুচ বিস্কিট খেয়ে খালি হাতে বাড়ী ফিরতাম।

(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

লাইলি আরো বলেন, ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম বড় হয়ে সংসারের হাল ধরব, চাকরি নয় নিজেই হব প্রতিষ্ঠানের কর্তা আমি অন্যকে দেব চাকড়ি। আমার সিংগাইরের প্রচুর লোক প্রবাসী। ২০১০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ল্যাপটপের মাধ্যমে স্কাইপে প্রবাসীদের সাথে কথা বলিয়ে দিনে আয় হত ১ হাজার টাকা করে।

এর পর বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় আবেদনসহ অনলাইনে আবেদন ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শুরু করলাম। এর পর থেকে আমার আয় বাড়তে থাকে। এখন ডিজিটাল সেন্টারের নিয়মিত সেবাসহ ননজুডিশিয়াল ষ্টাম্প বিক্রি করে ভাল আয় করছি। বর্তমানে আমার মাসে ২০ হাজার টাকার উপরে আয় হচ্ছে।

লাইলির বাবা কফিল উদ্দিন বলেন, আমার কণ্যা ইন্টার পাশ করার পর সেন্টারে নরী উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে ডিগ্রীতে সেকেন্ড ক্লাস ও মাষ্টার্সে ব্যাবসায় শিক্ষায় ১ম শ্রেণীতে পাশ করেছে। ৭ বছর ধরে সংসারের সব খরচ ও বহন করছে।

মানিকগঞ্জ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সবুজ রায়হান বলেন, লাইলি আক্তার, আমার জেলার অনেক পুরুষ উদ্যোক্তার চাইতে বেশী আয় করছেন।

মানিকগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বাবুল মিয়া জানান, মানিকগঞ্জের ৭ টি উপজেলার মধ্যে ৬৫ টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে লাইলি আক্তার জেলার মধ্যে সফল নারী উদ্যোক্তার মধ্যে একজন।

মানিকগঞ্জ২৪/ সিংগাইর/ হা.ফ/ ৮ মার্চ/ ২০১৮।
আারও পড়ুন:

গ্রামীণ মেলার সাজ তৈরিতে ব্যাস্ত সাটরিয়ার সাজ কারিগররা

আরো পড়ুুন