মানিকগঞ্জ – ৩ বিএনপির প্রার্থীতা বাতিল, আওয়ামী লীগ ফুরফরে

সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ২৪ ডিসেম্বর:  মানিকগঞ্জ – ৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন একাই নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে বিএনপি মনোনাীত প্রার্থী আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন হাইকোর্ট বাতিল করে দেওয়ায় বিএনপির মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তাছাড়া বিএনপির উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কেউ নাশকতার মামলায় গ্রেপতার হয়ে জেলে ও ফেরারি রয়েছে।

মনোনয়ন চূরান্ত হয়ে এ আসনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ জোর প্রচারাণায় ছিল। আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক প্রতিদিনই একাধিক নির্বাচনী গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন পত্র অবৈধ ঘোষনা করেন হাইকোর্ট। সোমবার ( ১৭ ডিসেম্বর)  প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর পর থেকেই বিএনপি প্রার্থী আফরোজা খান রিতা নির্বাচন থেকে সটকে পড়েন।

মানিকগঞ্জ-৩ আসন মানিকগঞ্জ সদরের ৭ টি ইউনিয়ন, ১ টি পৌরসভা এব সাটুরিয়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে ১ম জাতীয় নির্বাচনে ১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ অনুষ্ঠিত হয় তখন আওয়ামী লীগ থেকে মফিজুল ইসলাম খাঁন কামাল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারী ২য় জাতীয় নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের বিএনপির দল থেকে আলহাজ্ব  নিজামুদ্দিন খান, ১৯৮৬ সালের ৭ই মে তৃতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে কর্ণেল অবঃ এ মালেক, ১৯৮৮ সালের ৩রা মার্চে চতুর্থ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে পূনরায় কর্ণেল অবঃ এ মালেক, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী পঞ্চম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি থেকে মো. নিজামুদ্দিন খান, ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী বিএনপির বির্তকিত ৬ষ্ঠ নির্বাচনে পূনরায়  মো. নিজামুদ্দিন খান, ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি থেকে মো. নিজামুদ্দিন খান, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬ আমলেই নিজামুদ্দিন খান মারা গেলে উপ- নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী এ্যাডভোকেট ওহাব মিয়া, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি থেকে হারুণার রশিদ খাঁন মুন্নু, ২০০৮ সালের নমব জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে জাহিদ মালেক স্বপন এবং ২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারী দশম জাতীয় নির্বাচনে বিনা প্রতিদন্ধিতায় আওয়ামী লীগ থেকে জাহিদ মালেক স্বপন  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

স্বাধীনতার পর থেকে শুরু থেকে দশম জাতীয় নির্বাচনে মোট বিএনপি থেকে ৫ বার, আওয়ামী লীগ থেকে ৩ বার ও জাতীয় পার্টিও ২ প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।

বর্তমানে মানিকগঞ্জ – ৩ আসনে কার্যত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ মালেক স্বপন একাই মাঠে রয়েছেন। তিনি প্রতিদিনই তার নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। যদিও তিনি ছাড়া গণফোরামের প্রার্থী মফিজুল খান কামাল সূর্য,  জাতীয় পার্টীর  প্রার্থী  জহিরুল আলম রুবেল লাঙ্গল,  বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মো. রফিকুল ইসলাম অভি কোদাল  প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

সম্প্রতি মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টীর  প্রার্থী  জহিরুল আলম রুবেল সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করে বলেন, দল বা জোট চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ মালেক স্বপনের জন্য তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দারাবেন। ফলে এ আসন নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সামনে কোন সমমনা কোন প্রার্থীই নেই।

মানিকগঞ্জ – ৩ নির্বাচনী আসন শনিবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে শহরে কোথায় গণফোরামের প্রার্থীর পোষ্টার থাকলেও নৌকা প্রতিক ছাড়া বাকী কোন দলের কোন পোষ্টার বা নির্বাচনী ক্যাম্প দেখা যায় নি। বিশেষ করে শহরের বাইরে সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদরের কোথায় কোন নৌকা ছাড়া কোন প্রচার নেই।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের নির্বাচন পরিচালনা কারী সদস্য মো. বালিয়াটী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন বলেন, বিএনপি বা কোন দল মাঠে আছে কিনা তা আমরা জানি না। আমরা নিয়মিত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের জয় নিশ্চিত।

জেলা যুবদলের সভাপতি বলেন, আমাদের বিএনপি প্রার্থী  আফরোজা খান রিতার নিশ্চিত জয় দেখে সরকার ষড়যন্ত্র করে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন বাতিল করেছেন। মামলা আতংকে বর্তমানে এ আসনের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কোন নেতাই মাঠে নেই। কেউ জেলে বা গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন শনিবার সন্ধায় নির্বাচনী সভা শেষে বলেন, আমি বিগত ১০ বছরে কয়েক হাজার টাকার দৃশ্যমান উন্নয়ন কাজ করেছি। তাই শতভাগ  নিশ্চিত আমিই জয়ী হব।

গণফোরামের প্রার্থী মফিজুল খান কামাল বলেন, বিএনপি প্রার্থী না থাকায় জোটগত আমাকে সাহায্য করলে আমি জয়ী হব।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮।
আরও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে ফেইসবুকে আ.লীগের ব্যাপক প্রচার মামলার ভয়ে পিছিয়ে বিএনপি

আরো পড়ুুন