হাসান ফয়জী, ২৩ ডিসেম্বর:
আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে
মানিকগঞ্জের ৩ আসনের প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে
নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। পাড়া মহল্লায় নিজে ও সমর্থকরা সরাসরি ভোটারদের
নিকট ভোট প্রার্থনা করার পাশা-পাশি ফেসবুকেও নির্বাচনী প্রচার করছেন। তবে
মানিকগঞ্জে ৩ টি নির্বাচনী আসনে সরকার দলীয় প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও
রাজনৈতিক মামলার ভয়ে বিএনপি ফেসবুকে প্রচারের পিছিয়ে আছে।
প্রার্থী ও দলের সমর্থকরা দাবী করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী
প্রচার করলে খুব সহজে ভোটারদের নিকট যাওয়া যায়। ভোটারগণও তাদের দাবী দাওয়া
খুব সহজে বলতে পারছেন। ফেসবুকে ভোট চাইলে প্রবাসী ও চাকুরিজীবিদের ভাল
সারা পাওয়া যায়। প্রবাসীরা নির্বাচনী জনসংযোগের ছবি দেখে তাদের নিকট
আত্বীয়দের মোবাইলে বলে দিচ্ছেন কাকে ভোট দিতে হবে। তবে এ নির্বাচনী প্রচার
নিয়ে আলোচনা সমালোচনা দুটোই আছে।
মানিকগঞ্জ ১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ এম নাঈমুর রহমান
দুর্জয়, ২ আসনের মমতাজ বেগম ও ৩ আসনের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী
জাহিদ মালেক স্বপন তাদের নির্বাচনী প্রচার ফেসবুকে চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে
সবচেয়ে এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও মমতাজ বেগম তাদের কর্মকান্ড বেশী দেখা
যাচ্ছে।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়
তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট সহ অন্তত শতাধিক সমর্থক নিয়মিত ফেসবুক
পোষ্ট দিচ্ছেন। এতে প্রতিদিন হাজার হাজার ভোটারদের নিকট সাড়া পাওয়া যাচেছ
বলে দাবী করেন তার সমর্থক এম আকাশ।
এসময় তিনি বলেন আমার ব্যক্তিগত আইডিতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ফলোয়ার এবং
পোনে ৫ হাজার বন্ধ আছে। আমি যখন একটি নির্বাচনী পোষ্ট দেই দলীয় নেতাকর্মী
ছাড়াও সাধারণ মানুষের নিকট চলে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে যাদের নিকট যেতে পারি
না তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়।
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী রাজু আহম্মেদ বুলবুল বলেন,আমাদের
তিন প্রার্থীই প্রতিদিনই নির্বাচনী জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ফেসবুকে লাইভ ও
নির্বাচনী পোষ্টার এবং জনসংযোগের পোষ্ট ব্যাশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে আমরা
সবসময় ফেসবকে আপডেট থাকি। বিশেষ করে ছাত্র- ছাত্রী ও কর্মজীবীদের নিকট
ফেসবুকে ভোট প্রার্থনা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মানিকগঞ্জ ২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কন্ঠ শিল্পী মমতাজ বেগমের
ব্যক্তিগত সহকারী মাহমুদুল হাসান জুয়েল বলেন, আমাদের নেত্রী সব সময়
ফেসবুকে পোষ্ট দেন। কোন ভোটার প্রশ্ন করলে তা উত্তর দেই ফলে আমরা ভোটারের
মনের কথাগুলি জানতে পারি।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ- ৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত স্বাস্থ্য ও পরিবার
কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের ব্যক্তিগত সহকারী সামছুল হক বলেন, আমরা
১০ বছরে বাপক উন্নয়ন কাজ শেষ করেছি। মানিকগঞ্জে মেডিকেল কলেজসহ শিক্ষা,
বিদ্যুৎ, রাস্তা ঘাটসহ অসংখ্য দৃশ্যমান উন্নয়ন কাজ করেছি। তা আমরা নিয়মিত
ফেসবুকে ও প্রামান্য চিত্র তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছি।
আওয়ামী লীগ ছাড়াও স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি ফেসবুকে নির্বাচনী
প্রচার কম করেন। নির্বাচনী কর্মকান্ড ফেসবুকে প্রচার করলে, ছবি দেখে মামলা
দেবার অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি কাজী রায়হান উদ্দিন টুকু
বলেন, বিএনপির কর্মকান্ড নিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে।
শুধু মাত্র ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করা কে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও যুবদলের
অর্ধশতাধিক নেতা জেলে আছেন। আবার সাধারণ মানুষের নিকট ভোট চাইছেন এমন ছবি
দিলে সে ভোটারের উপর নির্যাতন করে। তাই আমরা আপাতত ফেসবুক প্রচারণা কম
করছি।
কাজী রাসেল নামে এক ভোটার বলেন, ফেসুবকেই নির্বাচনী প্রচার সঠিক মনে হয়।
মানুষ এখন সবাই ইন্টারনেট চালাচ্ছে। আমি ছোট ব্যাবসা করি, আমার প্রার্থী ও
দলের নিকট কিছু বলতে পারি না। কিন্তু ফেসবুকের এসব পোষ্টে আমার কি চাওয়া
পাওয়া তা সহজে বলতে পারছি এবং উত্তরও পাচ্ছি।
মানিকগঞ্জে সংসদ নির্বাচনে পদ প্রার্থীরা শুধু ফেসবুকে নির্বাচন
প্রচারণা নয়, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নিউজ ও নিউজ লিংক শেয়ার
করছেন। এসব শেয়ার করার পর শেয়ার, লাইক ও মন্তব্য আসছে। ফলে ভোটের মাঠ,
চায়ের কাপের পর ফেসবুকের ওয়াল জুড়েও ভোটের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮।
আরও পড়ুন: