বাকিতে ১৪টি গরু ক্রয় করে সেই টাকা পরিষোধ না করার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীর ধরণা ধরছেন ভুক্তভোগী খামারী। তবুও মিলছে না কোন সুরাহা। টাকা চাওয়ায় ওই চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী খামারীকে উল্টো হুমকি-ধামকি দেয়াসহ নানান ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী খামারী এমএ সোহাগ জানান, চলতি বছরের ৫ আগষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন দুপুর ৩টার দিকে তার খামারে গরু কিনতে আসেন। মোট ১৪টি গরু ১৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় তার কাছে বিক্রয় করেন। মাত্র ৫০ হাজার টাকা নগদ পরিষোধ করে ১৭ লক্ষ টাকা বাকি রাখেন। ঈদের পরদিন বকেয়া ১৭ লক্ষ টাকা পরিষোধ করবেন শর্তে গরুগুলো নিয়ে যান। এসময় তার খামারে কলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুস সালামসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ঈদের পরদিন টাকা না দেওয়ায় তার কাছে টাকা চাইলে আজ না কাল টাকা দেব বলে ঘুরাতে থাকে। কয়েকবার টাকা দেয়ার দিন নির্ধারণ করলেও কিন্তু টাকা পরিষোধ করে নাই তিনি। পরবর্তীতে টাকা চাইলে সে ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি প্রদান করে। পরে বাধ্য হয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দূর্জয়ের কাছে অভিযোগ দেন। বিষয়টি সংসদ সদস্য শোনার পর ঢাকায় ওই চেয়ারম্যান ও খামারীকে ডেকে চেয়ারম্যানকে বকেয়া থাকা ১৭ লক্ষ টাকা ২টি কিস্তিতে খামারীকে টাকা পরিষোধ করার নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান তখন এমপি মহোদয়ের রায় মানলেও কিন্তু পরবর্তীতে চেয়ারম্যান একটি টাকাও পরিষোধ করেন নাই।
ভুক্তভোগী খামারী আরও জানান, অনেক ধার-দেনা করে গরু মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে তিনি আটিয়া উলাইল গ্রামে শশ^ুরবাড়িতে এই খামারটি করেছেন। ধার-দেনার টাকার প্রতি মাসে মোটা অংকের সুদ দিতে হচ্ছে। আবার খামারের শ্রমিকদেরও বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে তিনি এখন ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও টাকা উদ্ধার করতে পারছেন না। আবার বকেয়া টাকা তো পাচ্ছেনই না বরং চেয়ারম্যানের হুমকি-ধামকিতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই তিনি এ ব্যাপারে পাওনা টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে কলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম জানান, কলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গরু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করেন। এই সুবাধে গরু বাকীতে নেয়ার সময় সোহাগের খামারে উপস্থিত ছিলেন তিনি। তাই তিনি এই ঘটনার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী বলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, ওই খামারীকে ব্যাংকের চেক দেয়া হয়েছে ও ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে বলেছি। কিন্তু একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কথা বললে অতি দ্রুত একাউন্টে টাকা জমা করা হবে বলেও ঐ চেয়ারম্যান জানান।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৮ নভেম্বর ২০১৯।