মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার উত্তর কাউন্নারা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী ও পুত্রকে জবাই কর হত্যা করেছে দুরবৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাতের যে কোন সময় এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন সাটুরিয়া ইউনিয়নে উত্তর কাউন্নারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মজনু মিয়ার স্ত্রী পারভীন বেগম (২৬) ও তার ছেলে আব্দুর নূর (৬)।
বিষয়টি সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মো. মতিয়ার রহমান মিঞা নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে পারভিনের শাশুরি মাজেদা বেগম তাদের ডাকতে গিয়ে দেখে কে বা কারা ছুরি দিয়ে হত্যা করে রেখেছে। পরে মোবাইলে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনা স্থলে আসি।
মরদেহ দুটি বৃস্পতিবার দুপুরে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানায়, উত্তর কাউন্নারা গ্রামের ক্বারী আব্দুর রহমানের পুত্র মজনু মিয়ার সাথে একই উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামের হিকমত আলির কন্যা পারভীনের সাথে ১০-১১ বছর আগে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। মজনু- পারভীনের সংসারে ২ পুত্র। খুন হওয়া ছোট পুত্র আব্দুর নূর স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীতে পড়ত। আর বড় পুত্র আব্দুল করিম একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা পড়া শুনা করত। আর মজনু মিয়া ১৫ বছর ধরে প্রবাসী। সে বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত আছে।
পারভীন তার সন্তান নিয়ে বাড়ির দোতলার একটি ইউনিটে থাকতেন। পাশের অপর দুটি ইউনিটে পারভীনের শ^শুর-শ^াশুড়ি ও পারভীনের স্বামীর দুই ভাই পরিবার নিয়ে থাকতেন।
পারভীনের শাশুরি মাজেদা বেগম বলেন, আমার নাতি ও ছেলের বউকে যারা হত্যা করল, তাদের দ্রæত গ্রেপ্তার দেখতে চাই।
পারভীনের মা মজিরন বলেন, আমার মেয়ের সাথে তার শশুর- শাশুরির সাথে ভাল সম্পর্ক ছিল। আমার বুক যেমন খালি হল, এমন যেন আর কারও বুক খালি না হয়। আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই।
পারভীনের ভাই আলিমুর রেজা বলেন, আমরা এর কিছুই জানতাম না। সকালে খবর পেয়ে আসি। কে বা কারা এই হত্যা কান্ড ঘটাল। আমার বোনের ত কোন শত্রæ ছিল ন।
বিষয়টি সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মো. মতিয়ার রহমান মিঞা বলেন, বৃস্পতিবার রাতের কোন এক সময় মা- ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে দুরবৃত্বরা পালিয়ে যায়। পারভীনের বা তার শশুর বাড়ির কোন জিনিস খোয়া যায়নি। পারভীনের ঘরের দরজা ভাঙ্গাও ছিল না। আমরা খবর পেয়ে এসে মরদেহ দুটি তাদের খাটের উপর পরা অবস্থায় দেখি।
মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহহিউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, এ হত্যা কান্ড নিয়ে আমাদের পুলিশ বিভাগসহ অন্যান্য টিম পরিদর্শন করেছেন। পারভীনের গলায় এবং ছেলে নূরের পেটে ছরির আঘাতের কারনে তাদের মৃত্যু হতে পারে। তাছারা তাদের শরীলে আরো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা সমস্ত আলামত সংগ্রহ করেছি। সম্ভাব্য সকল বিষয় নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। এটি নৃশংশ হত্যা কান্ড। যারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদের দ্রæত গ্রেপ্তার করব।