রাজ্জাক হোসাইন রাজ: সরকারের
প্রত্যাক্ষ তত্ত্বাবধানে দৃশ্যমান উন্নয়ন হলেও অদৃশ্য
শক্তির অদৃশ্য থাবায় ব্যাহত
হচ্ছে ছোট প্রকল্প তথা
স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন…বদলে দিতে প্রয়োজন
কঠোর হস্তে দমন।
মহাজোট সরকার তথা শেখ
হাসিনা সরকার ৩য় মেয়াদে
ক্ষমতায় থাকা কালীন বাংলাদেশ
এগিয়েছে অনেকগুন। দেশের প্রতিটি খাতে
উন্নয়নের ছোয়ায় পালটে গেছে
দেশের চিত্র। কিছু কিছু
ক্ষেত্রে পার্শবর্তী দেশ ভারতকে ও
হার মানিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার।
অর্থনিতীতে নোবেলজয়ী ভারতের ডঃ অমর্ত্য
সেন তার একাধিক সাক্ষাতকারে
বলেছেন অর্থনৈতিক জিডিবি তে বাংলাদেশ
ভারতের থেকে এগিয়ে…।
বাংলাদেশের একসময়কার দৈনিন্দিন সমস্যা “বিদ্যুৎ” খাতে বাংলাদেশ আজ
১০০ ভাগ সফল তা
শুধু মাত্র সম্ভব হয়েছে
দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারের
দৃঢ় পদক্ষেপের কারনে। সাস্থ্য খাতে
বাংলাদেশ শিশু মৃত্যু হাড়
ও মাতৃ মৃত্যু হাড়
কমিয়ে অর্জন করেছে মিলেনিয়াম
ডেভেলপমেন্ট গোল এওয়ার্ড। এছাড়া ও দেশের
প্রতিটা খাতে হয়েছে অভূতপূর্ন্য
দৃশ্যমান উন্নয়ন।
বাংলাদেশের সবগুলো মন্ত্রনালয়ের মধ্য
সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়
অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ মন্ত্রনালয়ের মাননীয়
মন্ত্রী বাংলাদেশ আ,লীগের সাধারণ
সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের
তিনি দলীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার
পাশাপাশি তার মন্ত্রনালয়ের অধীনে
সমস্ত কাজ অত্যান্ত নিষ্ঠার
সাথেই পালন করছেন।
ইতিমধ্য
জনমনে ফাটাকেষ্ট নামেও বেশ পরিচিত।
যোগাযোগ ক্ষেত্রে ও বাংলাদেশ স্থাপন
করেছে দৃষ্টান্ত। ইতিমধ্যে ঢাকা শহরে বাস্তবায়ন
হয়েছে মহাজোট সরকারের মেঘা
মেঘা প্রকল্প তার মধ্য অন্যতম…
দৃষ্টি নন্দন হাতিরঝিল প্রকল্প,কুড়িল ফ্লাইওভার,মগবাজার
ফ্লাইওভার,গুলিস্থান মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার,রামপুরা ফ্লাইওভার।
এসব চলমান ফ্লাইওভারের পাশা
পাশি উদ্ভোদনের অপেক্ষায় রয়েছে মালিবাগ ফ্লাইওভার,মৌচাক ফ্লাইওভার…
ঢাকার বাইরে গাজিপুর–ময়মনসিংহ
রোড ৪ লেনে উর্তিন
করন,ঢাকা–চিটাগাং রোড
৪ লেন এখন চলমান।
ঢাকা শহরের জামজট নিরসনে
শেখ হাসিনা সরকার ইতিমধ্যেই
মেট্রো রেলের কাজ শুরু
করে দিয়েছে। মহাজোট সরকারের সবচাইতে
বড় চ্যালেঞ্জ “পদ্মা সেতু” সেই
পদ্মা সেতুর মত মেঘা
প্রকল্প বিশ্ব ব্যাংকের সাথে
পাল্লা দিয়ে দেশের জনগনের
টাকায় দৃশ্যমান সেতুতে রুপ দিয়েছে
এই মন্ত্রণালয়। পদ্মা সেতু আজ
আর কল্পনা না পদ্মা
সেতু আজ বাস্তব।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় সরকারের প্রত্যাক্ষ্য
তত্ত্বাবধানে দৃশ্যমান উন্নয়ন হলেও অদৃশ্য
শক্তির অদৃশ্য থাবায় ব্যাহত
হচ্ছে প্রান্তিক উন্নয়ন তথা স্থানীয়
পর্যায়ের উন্নয়ন।
হয়তো আমার সাথে অনেকেই
দ্বিমত পোষন করবেন আবার
দলীয় অনেক নেতা কর্মী
আমার এই লেখা বাকা
চোখে দেখবেন কিন্তু তারপরেও
বলছি শত কোটি টাকার টেন্ডার
থেকে সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকার
টেন্ডার পর্যন্ত অদৃশ্য শক্তির অদৃশ্য
থাবা। ছাত্র রাজনিতী করার
সুবাদে অনেক নেতাদের সাথে
উঠা বসার সুযোগ হয়েছে,দেখেছি নানা তেলেসমাতি।
ঢাকা মহানগর উত্তরের অন্তর্গত
কোন এক থানা আ,লীগের সভাপতির সাথে
একবার গিয়েছিলাম শিক্ষা ভবনে, নেতার
সাথে অফিস কর্মকর্তাদের আলাপচারীতায়
দেখলাম একটা স্কুল ভবন
নিন্মানের টেন্ডার পাবার জন্য অফিস
কতৃপক্ষ কে ১০ ভাগ
দিতে হবে তাও আবার
অগ্রিম এবং সে অনুযায়ী
নেতাকে দেখলাম ১১ লাখ
টাকা বুঝিয়ে দিলেন অফিস
কতৃপক্ষকে বাকি টাকা দুই
দিনের মধ্য দিবেন বলে
পতিশ্রুতি।
ব্যাছ কাজ মিলগিয়া কবার
মিরপুরের সেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার
সাথে গিয়েছিলাম কাওরান বাজার
পি ডব্লিউ ডি অফিসে।
ভাই কে বললাম কি
কাজে যাচ্ছি ভাই, বললেন
ইঞ্জিনিয়ার সাহেব কে খুশি
করতে, সেখানে দেখলাম আরেক
তামাশা।
টেন্ডার হবার আগেই সরকারী
কোয়ার্টারের রিপিয়ারিং এর কাজ। আর
সেই কাজ টেন্ডার আহবানের
আগেই রিপিয়ারিং,চুনকাম সবকিছু শেষ।
কাজ শেষে গোপন বিশেষ
পক্রিয়ায় অফিসিয়ালি যাষ্ট ফর সো
টেন্ডার আহবান। তারপর বিলের
আগেই ২য় দফায়.আবার
…ইঞ্জিনিয়ারের ইঞ্জিনিয়ারিং…. মানি বিলের পরে
আবার সাক্ষাতের দাওয়াত দিলেন ইঞ্জিনিয়ার
সাহেব।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবির) আওতায় স্থানীয় পর্যায়ে।
রিপিয়ারিং,গাইড ওয়াল নির্মান,ইটের সোলিং,রং
কাম সহ ছোট ছোট
প্রকল্প দেয় সরকার। কিন্তু
বাস্তব ক্ষেত্রে যা ঘটে… বাস্তব
অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি টেন্ডার
আহবানের পর ধুম পরে
শিডিউল কেনার তারপর ড্রপিং
এর আগের রাতে স্থানীয়
নেতা,জেলার নেতা,প্রতিষ্ঠিত
ঠিকাদার,নামমাত্র ঠিকাদার সবাই একত্রিত হয়
নেগুসিয়েট করার জন্য।
এই নিগুসিয়েট বোর্ড নির্ধারণ করে
কে কে টেন্ডার ড্রপিং
করবে। এবং নিয়ম অনুযায়ী
প্রতিটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য শুধু
মাত্র একজনের ফার্মের নামেই
টেন্ডার বাক্সে টেন্ডার পরবে।
তার জন্য ফার্মের মালিক
অথবা ঠিকাদার কে নিগুসিয়েট বোর্ডে
দিতে হয় মোট টাকার
৫ ভাগ,এবং টেন্ডার
ড্রপিং এর দিন সকাল
থেকে ড্রপ করার শেষ
সময় পর্যন্ত টেন্ডার বাক্স পাহারা দেবার
লোক ঠিক করে অত্যান্ত
সু কৌশলে অফিস কে
ম্যানেজ করে পরিচালিত হয়
টেন্ডারবাজীর কাজ।
অফিস কতৃপক্ষ ম্যানেজ না হলে ভেস্তে
যায় পক্রিয়া, থানা,পুলিশ,সাংবাদিক
ইত্যাদি নানা ঝামেলা। তাই
অফিসের বিষয় আগে থেকেই
মাথায় থাকে নিকু বোর্ড
প্রধানদের। কখনো কখনো এস.পি অফিস,ডিসি
অফিসে ও টেন্ডার বাক্স
থাকে সেখানেও একই পক্রিয়া মাঝে
মাঝে বাক্স পাহারায় সিনিয়র
নেতাদের বসিয়ে রাখা হয়।
ব্যাছ হয়ে গেলো কাজ
শুরু হবার পর থেকে
শেষ পর্যন্ত একজন ইঞ্জিনিয়ার প্রতিদিন
সাইড পরিদর্ষন করেন। তার যাতায়াত,
খাবার,বিদায় বেলায় সম্মানী
বাবদ ১০০০ থেকে শুরু
করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত
গুনতে হয় ঠিকাদার কে
না হলে কলমের খুচায়
বিল আটকে দেবে বলে
প্রকাশ্যে হুমকি দেয় সাইড
ইঞ্জিনিয়ার।
এই সুযোগে ইঞ্জিনিয়ারদের টাকা
দিয়ে ৪০/৫০ ভাগ
কাজ করে বাকি কাজ
কলমের খোচায় ok করিয়ে নেন ঠিকাদাররা।
এবার বিল তোলার জন্য
বিল পাবার আগে একবার
এবং চেক হস্তান্তর করার
সময় আরেকবার… মানি দিতে হয়
অফিস কে…না হলে
কাজে ত্রূটি দেখিয়ে বিল
আটকা।
তারপরও নাকি ৩ লাখ
টাকার কাজে সর্বনিন্ম ১
থেকে দেড় লাখ টাকা
লাভ হয় ঠিকাদারদের। তাহলে
কোটিতে কত বুঝছেন তো….?
হিসাব বরাবর ফলে ২ থেকে ৫
মাসের মধ্যে রাস্তা/ঘাট
যেই লাউ সেই কদুতে
পরিনত হয়।
আবার একই
ভাবে পরের বছর সরকারী
মাল দড়িয়ার ঢালার যত
পক্রিয়া আছে তা শেষ
করে পুনরায় রিপেয়ারিং টেন্ডার। তাতে করে– মেঘা প্রকল্পের মত
এসব ছোট,মাঝারী,কিংবা
বড় প্রকল্প সরকারের প্রত্যাক্ষ্য তত্ত্বাবধান না থাকলে জনগনের
কষ্টে অর্জিত অর্থ রিপিয়ারিং
এর নাম করে সরকারী
অসাধু কিছু ইঞ্জিনিয়ার ও
ঠিকাদারদের যেমন পেট ভরবে
তেমনি বছরের পর বছর
সিমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হবে রাষ্ট্রের
সকল ক্ষমতার উৎস এই সাধারণ
জনগনকে।
আর সরকারের সদিচ্ছা থাকা সত্যেও এসব
অসাধু কিছু সরকারী ইঞ্জিনিয়ারদের
ছোট ছোট কিছু ভুলে
বিরোধী পক্ষ ভোটের রাজনিতীতে
ফায়দা লুটতে পারে বলে
আমার বিশ্বাস। কারন কথায় বলে ১৪
মন দুধে ১ ফোটা
চনা যথেষ্ট তাই
বদলে দিতে প্রয়োজন কঠোর
হস্তে দমন।
লেখক রাজ্জাক হোসাইন রাজ,
সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগ সংসদ।
লেখাটি লেখকের একান্তই নিজস্ব
মতামত।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৬
সেপ্টেম্বর/ ২০১৭।