৪ বছরেও সংস্কার হয়নি ঘিওর- দৌলতপুর- কুস্তাগ্রামের সড়কের

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী: ঘিওর –দৌলতপুর
সড়কের  কুস্তাগ্রামের কিছু অংশ কালিগঙ্গা নদীতে
ধসে যাওয়ার ৪ বছরেও সংস্কার করা হয় নি।  ঘিওর
– দৌলতপুর উপজেলার মধ্যকার সংযোগ সড়কটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ দুটি উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের
হাজার হাজার পথচারীদের সরাসরি কোন যানবাহন না থাকায় চরম ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায় ঘিওর – দৌলতপুর সড়কের
কুস্তাগ্রামের কালিগঙ্গা নদী বয়ে গেছে। ২০১৪ সনের বন্যায় ঐ স্থানের এতে প্রায় ৫ শত
মিটার পাকা সড়ক সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পর থেকেই সব ধরনের যানবাহন দুই
পাড়ে থাকে। ঐ ভাঙ্গা স্থান পায়ে হেটে যানবাহনে চড়ে দুই উপজেলার মানুষদের যাতায়াত করতে
হয়। আর মটর সাইকেল আরোহীরা ৩ বছর কোন রকম ঠেলে যেতে পারলেও ২০১৭ বন্যায় সে অবস্থাও
নেই।
সরেজিমিনে স্থানীয় যানা যায়, ঘিওর উপজেলার
ঘিওর পয়লা,  দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর, খলসি,
চড়কাটারিয়া ও  বাঘুটিয়া ইউনিয়নের উপজেলা, জেলা
ও ঢাকার সড়কের উঠার একমাত্র সড়ক এটি। ফলে হাজার হাজার পথচারীদের সীমাহিন দুর্ভোগে পোহাতে
হচ্ছে। এ সড়কে কৃষি পণ্য হাট বাজারে নিতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে কৃষকদের।
 এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঘিওর ইউনিয়নের
চেয়ারম্যান  মো. অহিদুল ইসলাম টুটুল জানান,
এলজিইডির ঘিওর – দৌলতপুর উপজেলার এ সড়কের কুস্তা গ্রামে যেটুকু সড়ক কালিগঙ্গা নদীতে
বিলীন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর কে একাধিকবার জানালেও কোন কাজ হয় নি। 
এ চেয়ারম্যান আরো জানান, ২০১৭ সালে
এ স্থানটি মেরামত করার জন্য এডিপি থেকে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ চাইলে তা পাশ হয় । কিন্তু
স্থানীয় সাংসদ এটি কেটে দেন। ৪ টি বছর ধরে দুই উপজেলার ৬ টি গ্রামের প্রতিদিন গড়ে হাজার
বিশেক পথচারি কষ্ট করলেও আমরা কিছুই করতে পারছি না। কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে হসপিটালে
নেবার জন্য এম্বুলেন্সও আসে না এ সড়কে। 
এ সড়কদিয়ে চলাচলকারি ফরিদ জানান, আমি
চাকুরী করার সুবাধে দৌলতপুরের জিয়নপুর যাই। সরাসরি কোন যানবাহন নেই। মানিকগঞ্জ থেকে
ঘিওরে বাসি আসি। এর পর সিএনজি করে কুস্তাগ্রামের ভাঙ্গার আগে নামি। পায়ে হেটে ভাঙ্গা
অংশ পার হওয়ার পর আবার সিএনজি করে গন্তব্য স্থলে যেতে হয়। 

এ ইউনিয়নের বাসিন্দা ঘিওর কলেজের বিএস
এস অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী  রোজিনা আক্তার জানান,
এই সড়কদিয়ে ৫ টি প্রাথমিক বিদ্যায়ল, ২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১টি কলেজ সহ ৬টি ইউনিয়নের
অন্তত ৩০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ এই সড়ক দিয়েই যাতায়াত করে। বর্তমান সরকার
শিক্ষা বান্ধব হলেও এ সড়কটি দেখে তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।
এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
শামীমা খন্দকার বলেন, স্থানীয় সাংসদ এ, এম নাইমুর রহমান দুর্জয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের
মাধ্যমে ২০১৭ তে  ৯০ লক্ষ টাকার কাজ করেছিলেন।
কিন্তু সে কাজ কারতেও কোন কাজ হয় নি। এখানে আরও বড় প্রজেক্টে আনলে সড়কটি আবার তৈরি
করা সম্ভব। 
ঘিওর উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার লিয়াকত
হোসেন জানান, এ সড়কটি এলজিইডির। ৪টি বছর ধরে চলাচলের অযোগ্য থাকাতে একাধিকবার লিখিত
ভাবে জানিয়েছি। এলজিইডি জানিয়েছে এটি  পানি
উন্নয়ন বোর্ডের কাজ। তাদেরকে চিঠি দিলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে জানালেও ৪ বছরে কাজ
শুরু হয় নি।

ঘিওর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সাজ্জাকুর
রহমান জানান, সড়কটি আমাদের হলেও কলিগঙ্গা নদীতে তা বিলীন হয়েগেছে। নদীতে বাধ না দিলে
কোনভাবেই সড়কটি রাখা সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের
সহকারী পৌকশলী মো. আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, আমরা এ সড়কের অস্থায়ী কাজ করেছিলাম। স্থীয়ভাবে
৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ হয়েগেছে। যা কিছু দিনের মধ্যে অর্থবরাদ্ধের জন্য মন্ত্রণালয়ে
পাঠানো হবে।
মানিকগঞ্জ২৪/ ১৮ জানুয়ারী/ ২০১৮।
আরও পড়ুন:

ঘিওর-ঠাকুরকান্দি – রসুলপুর সড়কের বেহাল দশা

আরো পড়ুুন