গ্রামীণ মেলার সাজ তৈরিতে ব্যাস্ত সাটরিয়ার সাজ কারিগররা

মোহাম্মদ হাসান ফয়জী ॥  চলছে শীত মৌসুম। আর এই তিব্র শীতেই চলছে  গ্রামীণ মেলা। গ্রামে গ্রামে মেলা আর ওরশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে । গ্রামীন মেলা সেখানে উঠবে না বিন্নি, বাতাসা। এসব উপকরণ ছাড়া কল্পনাই করা যায় না গ্রামীণ মেলা। গ্রাম ত বটেই শহরেও মেলার দিন গাভীর দুধ দিয়ে বিন্নি বাতাসা না খেলে কি চলে। গ্রামীন মেলা কে কেন্দ্র করে বিন্নির সাথে, বড় বাতাসা, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকার সাজ ছাড়া চলেই না। আর এ সাজ তৈরি করেই সংসার চালাচ্ছেন জেলার সাটুরিয়া উপজেলার কয়েক পরিবার।

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটীর ভাটারা গ্রামের কয়েক বণিক পরিবার প্রায় ১৫০ বছর ধরে বিন্নির সাজ তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন। গ্রাম কিংবা মেলার মধ্যে বিন্নির সাথে সাজ যেমন বড় বাতাসা, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকা প্রয়োজন পড়ে। আর এ সাজ শুধু মাত্র জেলার একটি গ্রামেই তৈরি করে থাকে, সেটি হচ্ছে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটীর ভাটারা বনিক পাড়ায়।

এ বালিয়াাটীর সাজ মানিকগঞ্জ ছাড়াও টাঙ্গাইল, ঢাকার জেলার বিভিন্ন স্থানে চলে যাচেছ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সাটুরিয়া উপজেলার ভাটারা গ্রামের শ্যামল, দিলিপ বণিক এ সাজ তৈরিতে মহা ব্যাস্ত সময় পার করছে। সাজ সর্ম্পকে তারা ১ম ধারণা দেন, বিন্নি হচ্ছে কিছুটা মুড়ির মত, বিন্নি ক্ষেতে হলে দুধ লাগে আর মিষ্টির জন্য এ সাজের প্রয়োজন পড়ে।  সাজ শুধু মাত্র চিনি দিয়ে বানানো হয়। আর বড় বাতাসা বানাতে গেলে চিনির সাথে আখের গুর লাগে।

দিলিপ বণিক আরো জানান, প্রথমে বিশেষ ভাবে তৈরি করা পাতিলে চিনি জাল করা হয়, চিনি ঘলে গেলে, সে গরম চিনির পানি, ঘোরা, হাতি, মটুক, পাখি ও নৌকার কাঠের ফর্মায় ডালা হয়। মিনিট ১০ পরেই তা আবার ফ্রেম থেকে খুলে ফেলা হয়। আর তৈরি হয়ে যায় সাজ।

আর কদমা বানাতে গেলে চিনির জাল করে আবার তা ঠান্ডা করে, বিশেষ ভাবে বড় রশির মত  তৈরি করা হয়, পড়ে তা চিকুন সুতা দিয়ে ছোট ছোট আকারে কাটা হয়, তখন তৈরি হয়ে যায় কদমা । বৈশাখ মেলা উপলক্ষে প্রায় ৫ প্রকার সাজ তৈরি করা হচ্ছে।

এ সাজ করিগর ভগবত বনিক জানান, আমাদের বাপ- দাদারা এ ব্যাবসা করতেন, তাতে কম করে হলেও প্রায় ১৫০ বছর ধরে এ ব্যাবসা করে আসছি। তিনি আরো জানান, আমরা বতর্মানে ৫টি পরিবার এ সাজ তৈরি করে আসছি। মানিকগঞ্জের শুধুমাত্র আমরাই এ ব্যাবসা করে আসছি।

দিলিপ বণিক জানান,  গত বছরের ১লা বৈশাখে আমরা প্রায় ৩০০ মুন সাজ তৈরির অর্ডার পেয়েছিলাম।  আমরা প্রতি কেজি সাজ পাইকারী বিক্রি করছি ৭০ টাকা , আর মেলার দিন তারা ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি করে থাকে। এক মুন সাজ তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ২ শত টাকা, আর পাইকারী বিক্রি করা যায় ২ হাজার ৮ শত টাকা । বড় বাতাসা ১ দিনে ২ মুন তৈরি করা যায়,আর সাজ তেরি করা যায় ৪ মুন পর্যন্ত।

চলতি শীতের  মৌসুমে বিজয় মেলাসহ চলছে বিভিন্ন ওরশ ও মেলা। আর এ মেলা কে কেন্দ্র করে বর্তমানে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ সাজ কিনতে ভীর করছে পাইকার রা।  মেলা শেষ হলে সারা বছর শুদু বাতাসা ও তাল মিস্ত্রি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।  মেলার মৌসুম ছাড়া প্রতিটি পরিবার সপ্তাহে ৪-৫ মুন বাতাসা ও  মিস্ত্রি চাহিদা থাকে।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৪ জানুয়ারী/ ২০১৮।
আরও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে সাকিব আল হাসানের সাথে সেলফি তুলার হিড়িক

আরো পড়ুুন