হাসান ফয়জী, পাটুরিয়া ঘাট থেকে, ৩০ অক্টোবর:
ফেরি উল্টে যাবার ৪ দিনের সন্ধায় সবগুলি যানবাহন উদ্ধার করতে সক্ষম হল উদ্ধার কারী জাহাজ। এদিকে আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম শনিবার সকাল ১০ টার দিকে এসে বহরে যুক্ত হয়। উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দিয়ে এই জাহাজটি নদীর পাড়ে রাখা ৫ টি যানবাহনের মধ্যে দিনভর কাজ করে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ২ টি ট্রাক তীরে উঠাতে সক্ষম হয়। আর হামজা নিখোজ হওয় ট্রাকটি শনিবার সন্ধা ৭ টার দিকে রো রো শাহ আমানত ফেরি মধ্যে থেকে উদ্ধার করে ১৪ টি যানবাহন উঠাতে সক্ষম হয়।
হামজা উদ্ধার অভিযানে ৪র্থ দিনে দুটি কাভার্ড ভ্যান ও দুটি মটর সাইকেল উদ্ধার করেছে। এ নিয়ে তাদের সকল নিখোজ ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধার শেষ করল। তারা আজ কিংবা আগামী কাল ডুবুরী দল দিয়ে সার্চ করে কোন যানবাহন না পেলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত ঘোষনা করবে।
অপরদিকে শনিবারে যুক্ত হওয়া উদ্ধার কারী যাহাজ রুস্তম তারা শুধু ৫ ও ৪ নাম্বার ঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায় রাখা ৫ কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করা শুরু করে। শনিবার সন্ধা পোনে ৮ পর্যন্ত তারা ৪ টি যানবাহন খালী ফেরিতে উঠিয়ে দিয়ে নিদিষ্ট স্থানে রাখতে সক্ষম হন। এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত তীরে রাখা সর্বশেষ কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরী নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিটিএর যুগ্ন পরিচালক ও উদ্ধার অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা উদ্ধার কারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম শুধু নিখোজ যানবাহন উদ্ধার করব। এর পর আমরা ডুবুরী দল দিয়ে সার্চ করব আও কোন যানবাহন আছে কিনা। না পেলে আমরা উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করব। আর ফেরি উদ্ধারের বিষয়টি বিআইডব্লিউটিসির উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে।
এ দিকে শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে ডুবে যাওয়া ট্রাক চালক ও মালিকরা উদ্ধারকৃত যানবাহন ক্ষতি পূরণসহ দ্রুত হস্তান্তরের দাবীতে পাটুরিয়ার ৫ নাম্বার ঘাট এলাকায় মানববন্ধন করেছেন। এসময় মালিকরা বলেন, ডুবে যাওয়াতে আমরা ভিশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। উদ্ধারকৃত যানবাহন যে মাঠে রাখা হয়েছে তা অরিক্ষিত। সেখান থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুড়ি যাচেছ। তাই তারা দ্রুত হস্তান্তর কামনা করছেন কর্তৃপক্ষের নিকট।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, আগে আমরা যানবাহন উদ্ধার শেষ করব। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম মিলে সক্ষমতা নেই এ ফেরি তুলার। তাই কিভাবে ফেরি উদ্ধার কাজ শুরু হবে তা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবেন।
এর আগে বিআইডব্লিউটি এর চেয়ারম্যান গোলাম ছাদেক, দুর্ঘটনা স্থল পরিবদর্শনে এসে বলেন, আমরা সরকারীভাবে ফেরি উদ্ধার না করতে পারলে। প্রয়োজনে বেসরকারী ভাবে চুক্তি করে উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ফেরি দুর্ঘটনায় ক্ষতি গ্রস্ত মালিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যাবস্থা নেই। আর দ্রুত হস্তান্তরের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, যে কেউ মালিকানা দাবী করতে পারে। তাই যানবাহনের মালিকদের যাছাই বাছাই করে হস্তান্তর করা হবে। যাতে কোন বিব্রতকর অবস্থায় না পড়তে হয়।
২৭ অক্টোবর সকাল পৌঁনে ১০টার দিকে পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের ৫ নম্বর পন্টুনের প্রথম পকেটে আমানত শাহ নামের রো রো ফেরি যানবাহন আনলোড করতে গিয়ে ডান দিকে কাঁত হয়ে একাংশ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার পর ফেরি থাকা ১৪টি পণ্যবোঝাই ট্রাকসহ কয়েকটি মোটরসাইলে পদ্মা নদীতে তলিয়ে যায়। পরে উদ্ধার কাজে অংশ নেয় স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট।
এ দিকে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক কর্তৃক ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তাদের ৫ দিনে শেষ কর্মদিবস রবিবারও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন না। কারন ফেরি উদ্ধারের কোন খবর নেই। ফেরি উদ্ধার শেষ না হলে ত তাদের তদন্ত কাজ শেষ হবে না। এ বিষয়ে আগেই মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক গণমাধ্যকম কর্মীদের জানিয়েছিলেন, তারা সময় আবেদন করলের তা বড়িয়ে দেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/৩০ অক্টোবর ২০২১।