সাটুরিয়ায় স্প্রে আতংক, এবার শিক্ষকের বাড়ি থেকে ১২ লক্ষ টাকার মালামাল লুট

সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ৯ আগষ্ট:

এবার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. আবুল কাসেমের বাড়ির জানালার লক ভেঙ্গে ঘরে চেতনাশক স্প্রে করে লুট করেছে। মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় ঘরে প্রবেশ করে ১২ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালাংকার লুট করে নিয়েছে। একই রাতে প্রতিবেশি আঃ কুদ্দুসের বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালাংকার লুট করে দৃবৃর্ত্তরা।

ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাটারা গ্রামে। বিষয়টি সাটুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সুকুমার বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে সাটুরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে নিরবে চলছে ডাকাতি। পুলিশ বলছে বিষাক্ত বিষ প্রয়োগ স্প্রে করে অচেতন করে চুরি করছে একটি চক্র। নিরবে ডাকাতির হওয়ার কথা ক্ষতিগ্রস্থরা স্বীকার করলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে চুরি। এ ধরণের শতাধিক স্প্রে ডাকাতি বা চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এ চক্রের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কিন্তু যারা নিবর ডাকাতির কবলে পরেছেন তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় চেতনাশক স্প্রে করে মানুষকে অচেতন করে গরু নগদ টাকা ও স্বর্ণালাংকার লুটে নেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পরেছে মানুষ। প্রতি রাতেই কোন না কোন বাড়িতে স্প্রে ছিটিয়ে স্বর্ণালাংকার ও নগদ টাকা লুটে নিচ্ছে দুবৃর্ত্তরা। মঙ্গলবার রাতে বালিয়াটি ভাটারা গ্রামের আবুল কাসেম মাষ্টারের বাড়ির জানালা রড ভেঙ্গে ১২ লাখ টাকা স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় স্প্রে চক্র। পুলিশ বলছে বিছিন্ন ঘটনা।

এসব ঘটনায় সাটুরিয়া থানায় ৫ থেকে ৬ টি চুরি মামলা হলেও এ স্প্রে চক্রের কোন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারেনি সাটুরিয়া থানা পুলিশ।

এলাকার কিছু নেশাখোরদের ধরে এ মামলায় চালান দিয়ে পুলিশ দায় সাড়ছেন। সাটুরিয়া উপজেলা আইন শৃংঙ্খলা সভার সভাপতি ও ইউএনও শান্তা রহমান বলেন, যে হারে স্প্রে আতংঙ্ক বেড়েছে এতে আইন শৃংঙ্খলার চরম অবনতি দেখা দিয়েছে।

এদিকে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মাঝে মধ্যে অচেতন অবস্থায় রোগি ভর্তি হচ্ছে। তাদেরকে এক ধরণের নেশা জাতীয় তরল পদার্থ স্প্রে করলে তারা অচেতন হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।

গগ ২৯ জুলাই দিঘলিয়া ইউনিয়নের পৌলশুড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. জিন্নত আলীর বাড়ির তার ভাই মো. আজাহারের বাড়িতে চেতনাশক স্প্রে করে ১০ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালাংকার লুট করে নেয় এ চক্রের সদস্যরা।

এর কয়েকদিন আগে নওগা গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের বাড়ি গেট ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে ১২ লক্ষাধিক টাকা ও স্বর্ণালাংকার খোয়া যায়।

বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামের মো. হারুন, রজ্জব ও ইয়াসিনের বাড়িতে স্প্রে করে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালপত্র খোয়া যায়।

কোরবারির ঈদের ৪ দিন আগে বালিয়াটি মিশনপাড়া আকবর আলী ও মো. হযরত আলীর বাড়ি থেকে স্প্রে করে ৬ টি গরু নিয়ে যায়। যার আনমানিক মূল্য ১০ লক্ষ টাকা।

বালিয়াটি বাজারের ব্যবসায়ী মো. আয়নাল হকে চায়ের সাথে চেতনাশক প্রাণ করিয়ে সর্বস্থ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল মো. আমিনুর ইসলাম নামে ব্যাক্তি। ওই ব্যাক্তিকে পুলিশে দিলেও পুলিশ রহস্যজনক কারণে তাকে ছেড়ে দেয়।

গত তিনদিন আগে বালিয়াটি গ্রামের ননী সাহার ঘরের দরজা ভেঙ্গে দুই লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালাংকার ও নগদ টাকা লুট করে নেয়।

সাটুরিয়ার আইন শৃংঙ্খলা সভার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তা রহমান স্প্রে আতংঙ্ক বেড়ে যাওয়ায় আইন শৃংঙ্কলা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। মাসিক আইন শৃংঙ্খলা সভায় ইউপি চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করলেও এর তৎপরতা বেড়েই চেেলছে। তবে এ চক্রকে ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছেন।

সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মামুন আর রশিদ বলেন, এধরনে রোগী হাসপাতালে মাঝে মধ্যে ভর্তি হচ্ছে। যারা ওপিসিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে তাদের কিডনি ফেলসহ ও ফুসফুসের সমস্যা এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাল্টিঅরগান ফেল হয়ে মারা যেতে পারে।

সাটুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস বলেন, মঙ্গলবার রাতে ভাটারা গ্রামের শিক্ষকের বাডিতে চুরি হওয়ার কথা শুনে আমি নিজে ঘটান স্থল পরিদর্শন করেছি। ওই শিক্ষক মামলা দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ৯ আগষ্ট ২০২৩।

আরো পড়ুুন