সংস্কার শেষে নির্বচানের রোড ম্যাপ ঘোষনা করতে হবে- মানিকগঞ্জে জামায়াতের সেক্রেটারী
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৩ নভেম্বর:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সংবিধান, পুলিশ, নির্বাচন কমিশনারসহ বিভিন্ন সংস্কার দ্রুত শেষ করে, ডিসেম্বরের পর জাতীয় নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষনা করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানিকগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে মানিকগঞ্জ বিজয় মেলার মাঠে শনিবার দুপুরে এক কর্মী সম্মলেন ২০২৪ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, শেখ হাসিনার আমলা এখনও মাঠ প্রশাসনে আছেন। দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষনা না দিলে ফ্যাসিবাদীরা চক্রান্ত করে দেশ পূনরায় নস্যাত করতে পারে। ইউএনও, ডিসি, এসপি, এসআই, জজদের সাথে কথা বললেও এখনও বুঝা যায়, তাদের গায়ে ফ্যাসিবাদীর গন্ধ পাওয়া যায়। সংবাদিকরা প্রায় বলে, জামায়াতে ইসলামী যুক্তিক সময়ে নির্বাচন চায়, যুক্তিক সময়ের ব্যাখ্যা কি ? সুষ্ঠ ও অবাদ নির্বাচন করতে একটু সময় লাগবে। যখন প্রশান সংস্কার শেষে বুঝা যাবে, নির্বাচন দিলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশলীগ আমাদের ভোট দিয়ে আসবে না। যখন আমাদের গায়ে থেকে জর চলে যায়, তখন আর থার্ম মিটারের প্রয়োজন পড়ে না। ঠিক দেশের প্রশাসনের যখন জ¦র চলে যাবে, তখনই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদীর মাষ্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্র মানায় না। শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের কথা বলে ক্ষমতায় গিয়ে নিজেই গণতন্ত্রেরি সিরি সরিয়ে ফেলেন। পরে তিনি নিজের হাতে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিলেন। আর শেখ হাসিনাও তার পিতার মত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে। আবার তারা দাবী করে তিনি গণতন্ত্রের মানস কন্যা। রাষ্ট্রী সকল যন্ত্রকে তিনি কুক্ষিগত করে ফেলেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল দলের মিটিং মিছিল তিনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
সেক্রেটারী জেনারেল আরো বলেন, শেখ হাসিনার আমলেই গায়েবী মামলা চালু করেন। আগে আমারা মিথ্যা মামলা কথা শুনতাম। আর ফাসিস শেখ হাসিনা গায়েবি মামলার প্রথা চালু করেন। মানে আমি রইলাম কাশেমপুর জেলে, আমার নামে মামলা দেওয়া শুরু হল। অবাক, কান্ড। আমি জেলের ভিতর, আর আমি নাকি পুলিশকে মমা মারতে গিয়েছিলাম। দুনিয়ার কোন ফাসিষ্ট সরকর হেলিকাপ্টার চালিয়ে উপর থেকে গুলি করে নিজ দেশের, শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেনি। খুনী শেখ হাসিনা হিটলারকেও হার মানিয়েছে। এটা করে হাসিনা পৃথিবীতে নজির স্থাপন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা বিগত আমলে কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে দেয়নি। কি নির্মম পরিহাস। আগষ্ট মাসে আমাদের জামায়াত ও ছাত্র শিবির কে নিসিদ্ধ ঘোষনা করে। আর আল্লাহ তার ৪ দিনের মাথায় ৪৫ মিনিটের মধ্যে খুনী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। আর আমাদের আল্লাহ ইজ্জত দিলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ১৭ বছরের অবসান ঘটায় আমাদের ছাত্র আন্দোলনে, এই আন্দোলনে জামায়াতের সক্রিয় অংশ গ্রহণ করি। এতে জামায়াত, শিবির, বিএনপি এবং নিরাপদ ছাত্রদের খুনি শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ আমাদের উপর নির্বিচারে গুলি করে। এতে মুগ্ধ, আবু সাইদ ও মানিকগঞ্জের সাদ ও রফিকও নিহত হয়। আমরা ৫ আগষ্টের পর জামায়াতের পক্ষ থেকে সারা দেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ঘুরি। নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে দ্বারাই। তাদের সহানুভুতি দেখাই। ৫ আগষ্ট দিনও পুলিশ আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই নির্বিচারে গুলি করে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে।
সভায় মানিকগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মাওলানা মো. কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও অঞ্চল পরিচালক, ঢাকা উত্তর অধক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারী মাওলানা মো. নরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির ঢাকা উত্তরের অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ দেলওয়ার হোসাইনসহ আরও অনেকেই।
কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতা কর্মী ছাড়াও জেলার ৭টি উপজেলার ২টি পৌরসভা এবং ৬৫ টি ইউনিয়ন থেকে হাজা হাজার কর্মী দিয়ে বিজয় মেলার মাঠ কানায় ভরে যায়।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৩ নভেম্বর ২০২৪।