মানিকগঞ্জ ৩ আসনে স্বস্তীতে নৌকার প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সাটুরিয়া প্রতিনিধি, ২৯ ডিসেম্বর:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ ৩ আসনে শক্তিশালী কোন প্রার্থী না থাকায় স্বস্তীতে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও এ আসনে নৌকা মার্কা প্রতীক প্রার্থী জাহিদ মালেক।

শহরে দুই একটি স্থনে দুই একজন প্রার্থী পোষ্টার চোখে পড়লেও কোন গ্রাম গঞ্জে অন্য কোন প্রার্থীর পোষ্টার পর্যন্ত চোখে দেখা মিলে না। অপরদিকে প্রতীক বরাদ্ধের পর প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রার্থী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নির্বাচনী পোষ্টার দেখা যাচ্ছে। চলছে নির্বাচনী প্রচার মাইকিং। প্রতিটি ইউনিয়নে চলছে গ্রুপ ভিত্তিক ওঠান বৈঠক।

মানিকগঞ্জ-৩ আসনে প্রতীক প্রাপ্ত প্রার্থী রয়েছেন মোট ৬ জন। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ মালেক (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনএম) মনোনীত খালেক দেওয়ান (নোঙ্গর), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী এম হাবিব উল্লাহ (গামছা), গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য), তৃণমূল বিএনপি’র মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ (সোনালী আঁশ) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল (লাঙ্গল)।

মানিকগঞ্জ ৩ আসন সাটুরিয়া উপজেলার ৯টি এবং মানিকগঞ্জ সদরের ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এ আসনটি ছিল মূলত বিএনপির দখলে । ১৯৯১ সন থেকে ২০০৬ সন পর্যন্ত ৫টি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জয়ী হন। ওয়ান এলিভেনের পরে ২০০০৮ সনে এ আসনে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টানা ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। মনোনয় পাওয়ার আগে থেকেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে গেছেন।

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য , সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. রুহুল আমিন বলেন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা, সদর উপজেলার ৭ টি এবং সাটুরিয়া ৯টি ইউনিটসহ মোট ১৭টি সাংগঠনিক প্রতিদিনই নির্বাচনী গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন আমাদের নেতা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একটি করে ইউনিয়নে একাধিক স্থানে পথসভা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সময়ে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আয়োজন করছেন নির্বাচনী সভা। সেখানে মন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা অংশ গ্রহণ করছেন।

এ দিকে প্রতিক পাওয়ার পর পরেই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী জাহিদ মালেক তার নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও বাকী ৫ প্রার্থীদের তেমন কোন প্রচার প্রচারণা দেখা যায় নি। এ আসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য) এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল (লাঙ্গল) ছাড়া আর কোন প্রার্থীকে সাধারণ ভোটারগণ চিনেই না।

মফিজুল ইসলাম খান কামাল এ আসনে স্বাধীনতার পর প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রবীণ রাজনিতীবিদ। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাদারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে গণ ফোরামে যোগদান করেন। তাকে ৪০ উর্দ্ধো সকল ভোটার চিনেন।

জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল কে কিছুটা চিনেন। তিনি মানিকগঞ্জ -১ ও ৩ আসনেই প্রতিদন্ধীতা করছেন। মহাজোট থেকে মানিকগঞ্জ ১ আসনে তাকে নৌকার প্রার্থীর দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলে তিনি মুলত ঐ আসন নিয়েই বেশী ব্যাস্ত। ফলে মানিকগঞ্জ ৩ আসন নিয়ে জাহিদ মালেক স্বস্তীতে আছেন।

অপরদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও ভোটের মাঠে কি করবে, সেটাও ঘোর পাক খাচ্ছে। যদি ভোটের হার কম দেখাতে সিদ্বান্ত নেন। তাহলে বিএনপির ভোটার কেন্দ্রে যাবে ন। আবার ভোট কেন্দ্রে গেলে সেই রিজার্ভ ভোট ত নৌকায় উঠবে না।  সেক্ষেত্রে নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু অনুষ্ঠিত হয় সেই সমিকরণ দেখার জন্য  অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগ পযন্ত।

সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুখ খান মজলিশ মাখন বলেন, আমাদের বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১০-১৫ টি করে মামলা হয়েছে। ফলে আমরা এখনও ঘরে ফিরতে পারছি না।

সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিগত যে উন্নয়ন করেছেন,স্বাধীনতার পর আর কোন এমপি তা করতে পারেন নি। তাই এবার আমাদের নেতা ৪র্থ বারের এমপি নির্বাচিত হবেন।

তবে সাধারণ মানুষ বলছেন ভিন্ন কথা,নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার বলেন, শহরে বিএনপির সমর্থকরা ভোট দিতে কেন্দ্রে না গেলেও গ্রামের মানুষ ভোট দিতে ঠিকই যাবে। তখন আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাড়া বাকী ভোট কিন্তু গনফোরামের সুর্য মার্কায় ভোট দিবে।

জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জহিরুল আলম রুবেল বলেন, আমি ২ আসনে সমান তালে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও গণফোরামের মনোনীত প্রার্থী মফিজুল ইসলাম খান কামাল (উদীয়মান সূর্য) বলেন, আমি প্রতিদিনি মানিকগঞ্জ ও  সাটুরিয়ার উপজেলার একধিক স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয় প্রাপ্ত প্রার্থী জাহিদ মালেক বলেন, বিএনপি এখনও নির্বাচন বানচাল করার পরিকল্পনা করছেন। তারা ট্রেন পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। নির্বাচন বন্ধ হলে দেশে অরাজাকতা সৃষ্টি হবে। তারা মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু মানুষ অত বোকা না। তারা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পূনরায় নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩।

আরো পড়ুুন