মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ১৩ জুলাই:
এবাই কোরবাানির ঈদকে সামনে মানিকগঞ্জে রেখে ৫৫ হাজার ৮ শত ৮৮টি পশু লালন পালন করেছেন ১০ হাজার ৯ শত ২৬ জন খামারী। কিন্তু করেনা ও লকডাউনের কারনে জেলার সকল পশু হাট বন্ধ রয়েছে। এতে খামারি উপযুক্ত দাম বাদ দিয়ে পশু বিক্রি করতে পারবে কিনা দুশ্চিন্তায় আছেন। আর প্রাণী সম্পদ অফিস বলছেন ৮ টি অনলাইন পশুর হাটের প্লাট ফর্ম তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকার অত্যন্ত কাছের জেলা হওয়াতে মানিকগঞ্জের প্রতিটি কৃষক বাড়ি যেন একটি বাড়ি একটি খামাড়। জেলার ৭ টি উপজেলার ৬৫ টি ইউনিয়নের প্রায় বাড়িতেই ২/১ টি পশু পালন করে আসছে। অপরদিকে ৮-১০ বছর ধরে মানিকগঞ্জের বাহারী ধরনের নামে বেশী ওজনের ষাঁড় পশুর হাট কাপাচ্ছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস জানায়, চলতি বছরে মানিকগঞ্জ জেলায় ৭টি উপজেলা ও ২ টি পৌরসভা এবং ৬৫ টি ইউনিয়নের ১০ হাজার ৯ শত ২৬ জন খামারী ৫৫ হাজার ৮ শত ৮৮টি পশু লালন পালন করেছেন। কিন্তু ঈদের আর কিছু দিন বাকী থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে লালিত পশু কোরবানির হাটে বিক্রি করতে পারবেন কিনা শংকায় দিন কাটাচেছন কৃষকরা। চলমান লকডাউনে পশুর হাটও বন্ধ রেখেছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
জেলার আলোচাীত খামারী নোমাজ আলী বলেন, আমি ৪ বছর ধরে সাহেব নামে একটি ষাঁড় লালন পালন করেছি। আনুমানিক ওজন হবে ৪০ মণ। ইতোমধ্যে টেলিভিশন ও পত্রিকায় নিউজ হওয়াতে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে ষাঁড় দেখার জন্য কিন্তু কেনার জন্য আসছে না। এখন পর্যন্ত কোন পাইকার দাম বলে নি। গতবছর করোনা ও বন্যার কারনে বিক্রি করতে পারি নাই। ঈদের বাকী আর কিছু দিন হাট বন্ধ আছে। এবার বিক্রি না করতে পারলে পথে বসা ছাড়া উপায় নাই।
২৩ মণ ও ২৪ মণ ওজনের ষাঁড় লালন পালন কারী খামারি ফিরুজা বলেন, প্রণোদনার ২ লক্ষ টাকা, একটি এনজিও থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দুটি ষাঁড় পলাতাছি সন্তানের মত । প্রাণী সম্পদ অফিসে থেকে ষাঁড়ের ছবি তোলে নিয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ফোন পাই নি। ষাঁড় বিক্রি না করতে পারলে ঋৃণের টাকার পরিশোধ করব কিভাবে।
খামারী শাহনাজ বলেন, গত বছরও এই করোনার জন্য ষাঁড় বিক্রি করত পারি নাই। এ মানুষের দোকাট পাট বন্ধ হাতে টাকা নাই। কাষ্টমার নাই। আবার হাট বন্ধ । ষাঁড় কে কি খাওয়াব আর আমরা চলব কি করে।
সেলিম নামে এক খামারী বলেন, এ বছর ১৮ টি দেশী ষাঁড় কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে লালন পালন করেছি। অফিস বলছে, অনলাইন পশুর হাট জমে উঠবে ঈদের আেেগ। কিন্তু গ্রামের সাধারণ ক্রেতা- বিক্রেতাগণ অনলাইন বুঝে না।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, গাবতুলির হাটের কাছের জেলা হওয়াতে প্রতি বছর পশু লালন পালন করে থাকে এ অঞ্চলের খামারীদের। গেল করোনায় পর্যাপ্ত প্রণোদনায় দেওয়ায় এ বছর ৫৫ হাজার ৮ শত ৮৮টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। লকডাউনে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আমরা জেলায় ৮ টি অনলাইন পশুর হাটের প্লাট ফরম তৈরি করা হয়েছে। এখানে খামারী নাম, পশুর ছবি ও নাম্বার দেওয়া আছে। ক্রেতাকে সরাসরি খামারীর সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছি। ঈদের আগে করোনা স্বাভাবিক হলে পশুর হাট খোলে দিলে খামারীদের পশু নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে যাবে বলে দাবীও করেন এ কর্মকর্তা।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১৩ জুলাই ২০২১।