মানিকগঞ্জে প্রায় দেড় লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত

নিজস্ব প্রতিনিধি, ২ জুন:

মানিকগঞ্জে জেলায় এবার পশুর চাহিদার বেশী কোরবানী পশু মোটা তাজাকরণ করা হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় পশু ঈদকে সামনে রেখে অবাধে দেশে আনলে দেশীয় খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলায় চলতি ঈদুল আযহা উপলক্ষে ১ লাখ ২১ হাজার ৫ শত ৪২টি পশু লালন পালনের লক্ষ সাত্রা ছিল। সেখানে পশু লালন পালান করা হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৩ শত ৩০টি। চাহিদার চেয়ে ৭ হাজার ৭৮৮টি পশু বেশী প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলার বেশীর ভাগ গ্রামেইর প্রতিটি বাড়িতেই গরু, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করে। বিশেষ করে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছর এখানকার কৃষকরা গরু মোটা তাজা করণ করে থাকে। আর কয়েক দিন পর থেকে এ উপজেলার পশুর হাটগুলি জমে উঠবে।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরান হোসেন বলেন, বিগত ৭-৮ বছর ধরে ঈদ আসলেই সাটুরিয়ার নামটি উঠে আসছে। দেশের সবচেয়ে বেশী ওজনের পশু লালন পালন করে এ রেকর্ড করে সাটুরিয়ার খামারিরা। তবে এ বছর বড় পশু না থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে অনেক খামারীরা প্রস্তুত রয়েছে। চলতি বছরে সাটুরিয়ায় কোরবানির জন্য ২১ হাজার ১১ টি পশু লালন পালনের লক্ষ মাত্রা ছিল। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ৭ শত ৬৬ টি বেশী হয়ে ২১ হাজার ৭ শত ৭৭টি পশু লালন পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৮৫ টি গরু, ১২ হাজার ৫শত ৮৭ টি ছাগল এবং ১ হাজার ৯৯ টি ভেড়া প্রস্তুত হয়েছে।

এদিকে সাটুরিয়ার কোরবানির পশুর হাট জমে না উঠলেও স্থানীয় ভাবে যারা কোরবানি দিবেন, তারা ইতোমধ্যে গ্রামে গ্রামে গিয়ে খোজ খবর নিচ্ছেন। পছন্দ হলে আগে ভাগেই কিনে রাখছেন পশুগুলি।

সাটুরিয়া উপজেলার অর্গানিক র‌্যাঞ্চ এর মালিক সলিমুল্লাহ খান বলেন, এ বছর কোরবানী উপলক্ষে আমার খামারে ৪০ টি গরু মোটা তাজা করেছি। আমার গরু কোন হাটে নিয়ে বিক্রি করি না। বিভিন্ন জাত ভেদে ৪৮০- ৫৫০ লাইভ কেজিতে বিক্রি করব। গত বছরও খামার থেকেই সব গরু বিক্রি করেছি।

এ ব্যাপারে খলিলাবাদ গ্রামের কৃষক পাখি বলেন, এ বছর পশু পালন করতে খরচ বেশী হয়েছে। সারা বছরই বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রমণ হয়েছিল। তাছাড়া প্রতি মাসেই পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে কয়েক দফায়। তাই ভাল দাম না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হব।

গর্জনা গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, এ বছর একটি দেশী ষাড় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে মোটা তাজা করণ করেছি। শুনতাছি ভারত থেকে গরু আয়তাছে। তাহলে আমারা উপযুক্ত দাম পাব না।

বালিয়াটি ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের কহিনুর বলেন, এ বছর ২ টি ষাঁড় লালন পালন করেছি। আমি আশা কারছি ২ টা ষাঁড় ৩ লক্ষ টাকা বিক্রি করতে পারব। এতে আমার সব খরচ বাদ দিয়ে ৬০- ৭০ হাজার টাকা লাভ হবে।

বরাইদ ইউনিয়নের বড় পয়লা গ্রামের কৃষক নয়া মেকার বলেন, আমাদের ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক পশু কোরবানি ঈদ উপলক্ষে মোটা তাজা করণ করা হয়েছে। প্রতিটি বাড়িতেই গরু, ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করা হয়েছে। আমি এ বছর ১৫টি গরু কোরবানি হাটে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত করেছি। আশা করছি ভাল দাম পেলে আমি ২ লক্ষ লাভ হবে।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পশু মোটা তাজা করণ উপলক্ষে আমরা সারা বছর কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়েছি। কোরবানীর পশুর হাট আর কয়েকদিন পরে জমে উঠবে। পশুর হাট ছাড়াও কৃষকের বাড়ি থেকে বিক্রি হবে। তাছাড়া আমাদের প্রতিটি উপজেরায় পৃথক পৃথক অনলাইন প্লাট ফর্মেও পশু বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২ জুন ২০২৪।

আরো পড়ুুন