মানিকগঞ্জে গরু বিক্রি করে লাভ নয়, পুঁজি ফেরতের আশায় খামারিরা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ২৯ জুলাই:

মানিকগঞ্জে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর গবাদি পশু মোটা তাজার করণ থাকে। কিন্তু এ বছর করোনার মহামারির পর আবার শুরু হয়েছে বন্যা। ইতোমধ্যে মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার ৬টি উপজলার নিন্মাচঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। প্রায় ১ মাস বন্যার পানি থাকায় সবেচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে গরুর খামারীরা। তারা এখন গুরু বিক্রি করে লাভ নয়, উৎপাদন খরচ উঠানোর আশায় দিন গুনছে। অথচ ঈদের বাকী মাত্র ২ দিন।

মানিকগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কাযালয় জানায়, আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে জেলার ৭টি উপজেলা ২ টি পৌরসভা ও ৬৫টি ইউনিয়নে ৪৬ হাজার ১শত ৮০টি গরু মোটাতাজা করণ করেছেন। ২২ হাজার ৭১৩ টি ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করেছন। এছাড়া দুধ উৎপাদনের লক্ষে মোট ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬৩১ টি গুরু রয়েছে। ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ছাগল ও ভেড়া লালন পালন করছেন। মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলা, ২ টি পৌরসভা এবং ৬৫ টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৫৬৩ জন খামারী রয়েছেন।

এ ব্যাপারে সাটুরিয়া বালিয়াটী ইউনিয়নের জামাল বলেন, আমি ঈদকে সামনে রেখে ১১ টি গরু লালন পালন করেছি। লোকসানে ২ টি গুরু বিক্রি করেছি। বাকী গরুগুলি চালান দামে বিক্রি করতে পারলে বাচতাম।

একই উপজেলার হরগজ গ্রামের নাসির মোল্লা বলেন, ১৫ মণ ওজনের ষাঁড় লালন পালন করেছি। ঋণ করে মহাজনদের নিকট টাকা নিয়ে ২ বছর ষাঁড়টি পালছি। ঈদের ২ দিন আগে বিক্রি না করতে না পারলে মরা ছাড়া উপায় নাই।

ফুকুরহাটি গ্রামের হারুন মিয়া ৩৫ মণ ওজনের একটি ষাঁড় লালন পালন করেছেন, নাম দিয়েছেন কালো চান।  বন্যার পানি বাড়ির চারদিকে আসছে। গরু বিক্রি না করতে পারলে ঈদটা বিক্রি করতে পারুম না।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মনির হোসেন বলেন আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ৯ হাজার ৪ শত ৯৭টি গরু ১০ হাজার ৩ শত ৪০টি এবং ছাগল  ও ভেড়া লালন পালন করেছেন সাটুরিয়ার উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন খামারীরা।  কিন্তু অধিকাংশ গবাদি পশুই অবিক্রিত রয়েছে।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ  জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম টুকু মিঞা বলেন,  এ বছর ১৩ টি গরুর হাট বসেছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলায় গরু, ছাগল ও ভেড়া মিলে ১৬ হাজার ৫৬৩ টি খামার রয়েছে। এসব খামারে ৪৬ হাজার গরু, ২২ হাজার ৭১৩ টি ছাগল এবং ৮ হাজার ৭৩০টি ভেড়া লালন পালন করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কারনে অনেক গবাদি পশুই বিক্রি করতে পারেন নি খামারীরা।  আমরা পরামর্শ দিচ্ছি ঢাকার আশে পাশের পশু হাটে নেবার জন্য।  কিন্তু আমরা আশা করব ঈদের আগের রাত পযন্ত আরও গরু বিক্রি হবে।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৯ জুলাই

আরো পড়ুুন