মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ১ অক্টোবর:
মানিকগঞ্জে আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। গেল কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও পাহারী ঢলে যমুনার নদী পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। মানিকগঞ্জের যমুনা নদীর পানি শিবালয়ের আরিচা পয়েন্টে গেল ২৪ ঘন্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার সকল নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কালীগঙ্গা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে পৌরসভা এলাকার বড় সরুন্ডি ও বোয়ালী এলাকার শতাধিক বসতভিটা ভাঙনের হুমকিতে।
তিন বছর আগে থেকেই একটু একটু করে ভাঙন শুরু হলেও সম্প্রতি বেড়িবাঁধে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন ও বড় বড় স্টিমার দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু আনা-নেওয়ার ফলে ভাঙন বেড়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। আর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বড় সরুন্ডি এলাকার বাসিন্দা জহির উদ্দিন জানান, প্রায় ১০ বছর আগে শহর রক্ষা জন্য এ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। তবে গত তিন বছর ধরে এ বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক মাস ধরে কালীগঙ্গা নদীর ভাঙনে তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে এ এলাকার প্রায় শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নাজমা বেগম নামে আরেক বাসিন্দা জানান, বেড়িবাঁধের পাশ ঘেঁষে নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন ও স্টিমার চলার কারণে ভাঙন বেড়েছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ বালু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় তা বন্ধ করা সম্ভব হয় না।
জুলেখা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসকে ভাঙনের বিষয়ে জানানো হয়েছে। আজ থেকে তো বেড়িবাঁধের ব্লক সব খুলে পড়ছে। আগে ব্যবস্থা নিলে এ ব্লকগুলো নদীতে বিলীন হতো না। তবে এখনো যদি ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয় অচিরেই প্রায় শতাধিক বসতভিটা নদীতে চলে যাবে।
বোয়ালী এলাকার মো. সিদ্দীক বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে এ বেড়িবাঁধের বেশ কয়েকটি অংশে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পাড়ের বেশ কয়েকটি বসতভিটার জমি, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব ভাঙন কবলিত জায়গায় বাঁশ ও বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন জানান, ২০০৯-১০ অর্থ বছরে বেউথা ঘাট এলাকা থেকে রমজান আলীর আম বাগান পর্যন্ত ২ হাজার মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের ভাঙন কবলিত অংশে পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হবে।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১ অক্টোবর ২০২০।