শিবালয় প্রতিনিধি, ২১ নভেম্বর
যমুনায় ‘বঙ্গবন্ধু’ সেতুর ওপর চাপ কমাতে অতি শীঘ্রই চালু হচ্ছে আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি সার্ভিস। আগামী বিজয় দিবসের মধ্যেই এই রুটে ফেরি চলাচল শুরু হবে এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আগামী বিজয় দিবসের আগেই যেন আরিচা-নগরবাড়ী নৌরুট চালু করা হয় সে লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিসি’র ফেরি সেক্টরের চেয়ারম্যান খাজা মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ গত ১৭ নভেম্বর প্রকল্প কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান জানান, নৌ-পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার লক্ষ্যে সরকার ৫১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নদী বন্দর নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যা আগামী ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করা হবে। প্রকল্পের মূল কাজের মধ্যে ভূমি উন্নয়ন, ড্রেজিং, পাকা জেটি, তীর রক্ষা বাঁধ নির্মান, সংযোগ সড়ক, স্টীল গ্যাংওয়ে, পন্টুন, কাঁটাতারের সীমানা প্রাচীর, যাত্রীছাউনি, পাকা সিঁড়ি, গুদাম, উন্মুক্ত স্থান, বন্দর ভবন, প্রশাসনিক ভবন, পরিদর্শন বাংলো, ডরমেটরি ও পাইলট হাউজ নির্মাণ।
এবিষয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় জানান, আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি সার্ভিস দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় জনসাধারনের দুর্ভোগ বেড়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, হাজার হাজার লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এবং যমুনায় ‘বঙ্গবন্ধু’ সেতুর ওপর চাপ কমাতে আগামী বিজয় দিবসের মধ্যেই আরিচা-নগরবাড়ী রুটে ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। ফেরি সার্ভিস চালু হলেই আগের রুপ ফিরি পাবে আরিচা ফেরি ঘাট। এবং ভোগান্তি কমার পাশাপাশি বাড়বে অনেক লোকের কর্মসংস্থান।
প্রসঙ্গত, দেশের দক্ষিণ ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সাথে সড়ক ও নৌ যোগাযোগের একমাত্র প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত আরিচা ঘাটটি ১৯৮৩ সালে নদী বন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ৬.৫৮ একর জমির উপর তৈরি করা হয় ফেরি টার্মিনাল। আরিচা-নগরবাড়ি ও আরিচা-দৌলতদিয়া রুটে এই ফেরি সার্ভিস চালু ছিল। ১৯৬০ সালে কর্ণফুলি নামের একটি ফেরি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল আরিচা ফেরি সার্ভিস। প্রথম যাত্রায় ফেরিটিতে একটি গাড়ি পাড় হয়েছিল। তার জন্য গাড়িটিকে ভাড়া গুনতে হয়েছিল ৭৫ পয়সা। তারপর একে একে বেশ কিছু কে টাইপ ও রোরো ফেরি যোগ হয় এই বহরে।
আরিচা ঘাটের অপমৃত্যুর যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে যমুনা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে। একদিকে যমুনা সেতু আরেক দিকে প্রাকৃতিক অর্থাৎ নদী ভরাটের কারনে ২০০২ সালে ঘাটটি পাটুরিয়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। ঘাট স্থানান্তরের সঙ্গে সঙ্গে বেকার হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২১শে নভেম্বর ২০২০।