সাইফুদ্দিন আহম্মেদ নান্নু, ২৫ জুন:
“বখাটে” সব ক্ষেত্রে খাটে না,লাউ গাছকে কেউ লাউবৃক্ষ বলে না….
সাংবাদিকতায় শব্দের আকাল কী এতই গভীর যে,কম বয়েসী ধর্ষক, খুনি,আর মেয়েকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদকারী বাবাকে যে ছুরি মারতে পারে তাদেরকেও “বখাটে” বলতে হবে !
বাংলার শব্দভাণ্ডার কী এমনই দীনতায় ভুগছে যে,এইসব খুনি, ধর্ষক, ছুরিকাঘাতকারী কুলাঙ্গারদের “বখাটে” না বলে আর কোন বিকল্পই নেই!
বখাটের আভিধানিক অর্থ কুসংসর্গে নষ্ট হয়ে গেছে / অধঃপাতে গিয়েছে এমন।
অভিধানে যাই থাকুক বখাটে শব্দটিকে আমরা লঘু অপরাধ,অবাধ্য,বেয়াদব টাইপের ছেলেদের ক্ষেত্রেই ব্যবহারে অভ্যস্ত,বুঝিও তাই।
ভয়ংকর, জীবনঘাতি,প্রাণঘাতি মানুষদের জন্য “বখাটে” শব্দটি বেমানান,অপরাধও বটে।
কখনো কী লিখতে দেখেছেন,বাখাটে নাথুরামের হাতে মহাত্মাগান্ধী নিহত,বখাটে বিয়ন্ত সিংয়ের গুলিতে নিহত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধী।
পত্রিকা,টেলিভিশন কী কোন দিন লিখেছে,বলেছে, লি হার্ভি অসওয়াল্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকারী।
অথবা মুফতি হান্নানের নামের আগে আমাদের মিডিয়া কি কোনদিন ভুলেও বখাটে লিখেছে! লিখেনি। তাহলে এদের ক্ষেত্রে বখাটে কেন!
এদের অপরাধের গভীরতা,ঘৃন্যতা কি কম?
বট গাছও গাছ,পুঁইগাছ,লাউ গাছও গাছ। কিন্তু জীবনে কোন দিন,কোথাও,কাউকে কি দেখেছেন “লাউবৃক্ষ”,”পুঁইবৃক্ষ” লিখতে?
কেউ লিখেন নি। বৃক্ষ শব্দটি বট আর অশথের মত গাছের ক্ষেত্রেই যায়।
দয়া করে এইসব নরপশুদের নামের আগে “বখাটে” লিখে এদের গায়ে লঘু অপরাধীর ফ্লেভার মাখাবেন না।
লেখা ও ছবি সাংবাদিক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ নান্নুর ফেসবুক থেকে নেওয়া।
মানিকগঞ্জ২৪/ ২৫ জুন ২০২০।