হারিরামপুর প্রতিনিধি, ২৯ আগস্ট:
পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র।
শনিবার (২৮ আগস্ট) রাত ১১ টার দিকে নদীর তীব্র স্রোতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির ৭০ ভাগেরও বেশী অংশ নদীতে চলে গেছে। সকালের দিকে বাকী অংশটুকু নদী গিলে খেয়েছ। গতবছর থেকে বারবার কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালেও ভাঙনরোধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি অভিযোগ এলাকাবাসীর।
আজিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, চরাঞ্চলের আজিমনগর, লেছড়াগঞ্জ ও সুতালড়ী এই তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের জন্য জন্য মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আজিমনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২০১২-১৩ অর্থবছরে হাতিঘাটা গ্রামে কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কাজ শেষ হয়। ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, গতবছর এটি নদী থেকে দেড়শো গজ দূরে থাকা অবস্থায় লিখিতভাবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ভাঙনে কবল থেকে রক্ষা করতে চলতি বছরও হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছেন বলে আমাকে জানান। কিন্তু ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগই নেয়নি।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে একই উপজেলার সুতালড়ী রামচন্দ্রপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া চলতি বছর, শতাধিক বাড়ি-ঘর, বিস্তীর্ণ ফসলী জমি ইতিমধ্যেই নদীতে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান।
ঘরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় মানিকগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে নদীতে প্রচন্ড স্রোত থাকার কারণে ভাঙনরোধে কিছুই করা সম্ভব নয়। বিগত সময়ে কিছু কিছু এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সফল হইনি।
তিনি আরো বলেন, চলতি মাসেই একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা সর্বাতœক চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিদ্যালয়টিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারিনি। একারণে আমরা এখন আর নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে কাজ করছি না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, ভবিষ্যতে যাতে নদীতীরবর্তী ভাঙনকবলিত এলাকায় পাকা ভবন না করে, স্থানান্তরযোগ্য স্থাপনা তৈরী করা হয়। যাতে, ভাঙনের আগেই তা সড়িয়ে নেওয়া যায়।
মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ২৯ আগস্ট ২০২১।