দুই টাকা কম দেন
মিজানুর রহমান মিরু, ১২ অক্টোবর ২০২০:
আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে জনগণকে জিম্মি করে শতকোটি টাকার মালিকবনে যাচ্ছেন। আর অসৎ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করছেন সয়ং সরকারের মন্ত্রী, সচিব এবং বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা। আমরা অসহায় জনগণ, বিশেষ করে মধ্যবিক্ত শ্রেনীর মানুষ গুলো নিরবে নিভৃতীতে চোখের জলে মালিকের নিকট মুক্তির পথ খুজে বেরাচ্ছি।
পরিবহন ব্যবসায়ীরা সিটিং সার্ভিস এর নামে হঠাৎ পাঁচ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা, ১০ টাকার ভাড়া ২৫ টাকা করে বসলেন। অথচ সরকারের নির্ধারিত ভাড়া ১.৫০ পয়সা প্রতি কিলোমিটার। সরকার জনগণের প্রতিনিধি হয়ে পরিবহন মালিকদের সাথে আলোচনায় বসলেন। ফলাফল, সরকারের পক্ষে জনগণের জন্য পরিবহন মালিকদের বলা হল, ভাড়া বাড়িয়েছেন কিন্তু খবরদার গাড়ির গেইট খোলা যাবে না।
গরুর মাংস ছিল ৩০০ টাকা কেজি। হঠাৎ ব্যবসায়ীরা দাম হাঁকালেন ৫০০ টাকা কেজি । সরকারের পক্ষে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনায় বসলেন। ফলাফল, সরকার জনগণের জন্য ব্যবসায়ীদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করেছেন ৪৫০ টাকা কেজি। যদিও এখন ৫৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ৩০ টাকার পিয়াজ হঠাৎ ২৫০টাকা কেজি হল।
সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনায় বসলেন। ফলাফল, সরকার জনগণের জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করলেন ১৫০ টাকা কেজি। এভাবে ব্যবসায়ীরা টানা তিন মাস অসৎ পন্থায় জনগণকে জিম্মি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন। মৌসুমে ৪০ টাকায় নেমে আসলেও আবার সেই একই পন্থায় এখন ৯০ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
একই পন্হায়, কোন সংকট না থাকলেও চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫/৭ টাকা করে বাড়িয়ে দিলেন ব্যবসায়ীরা।জনগণের জন্য সরকারের পক্ষে এ ব্যপারে কোন দৌড়ঝাপ নেই। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে মাঝে মধ্যে জরিমানা করা হলেও ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত মূল্যেই জনগণকে টাকা গুনতে হচ্ছে।
বর্তমানে, বাজারে যে কোন সবজির মূল্য ৮০ টাকার উপর। অর্থাৎ ৮০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যায় না। এভাবে চলতে থাকলে সোনার বাংলা এবং নতুন বাংলাদেশের জনগনকে দুর্ভিক্ষ দেখতে বেশিদিন সময় লাগবে বলে মনে হয় না।
বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করার পরও তাদের লাগামহীন ঘুষ দূর্নীতি, লুটপাটের কারনে দেশে আজ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অসৎ ব্যবসায়ীদের দমন করতে ব্যর্থ হচ্ছে , নাকি তাহারাই সিন্ডিকেট এর অংশ হিসেবে জনগণের সাথে ইদুর বিড়াল খেলা খেলছেন।
আমি মন্ত্রীদের অনুরোধ করবো আপনারা নিজেদের সংশোধন করে শক্ত হয়ে দাড়ান, পায়ের নিচে মাটি না থাকলে কি হবে, ইট বালু সিমেন্টতো রয়েছে। অসৎ কর্মকর্তা কর্মচারীদের ধরুন, অসৎ ব্যবসায়ীদের কঠোর হস্তে দমন করন।শুধু মাত্র ছিঁচকে সন্ত্রাসীদের ক্রস ফায়ারে না দিয়ে, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারী, অসৎ ব্যবসায়ী এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করুন জনগণকে বাঁচান। জনগণকে বুঝিয়ে দিন ১০ আর ৫ = ১৫ হয়, বাইশ নয়।
মিজানুর রহমান মিরু
শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
জাতীয় পার্টি।
প্রকাশিত মন্তব্য কলামটি লেখকের নিজস্ব মতামত, এর সকল দ্বায়ভার লেখকের।
মানিকগঞ্জ২৪/ ১২ অক্টোবর ২০২০।