ঘিওরে নৌকার হাট জমে উঠেছে

ঘিওর প্রতিনিধি, ১১ জুলাই:

মানিকগঞ্জের ঘিওরে নৌকার হাট জমে উঠেছে। প্রতিবছর বর্ষা এলেই জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ নৌকা হয় একমাত্র যানবাহন। ফলে শত বছর ধরে বর্ষার কয়েক মাস প্রতি বুধবার ঘিওর উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহের মাঠে চলে আসছে ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট। ক্রেতারা বলছেন গতবছরের চেয়ে এবার দাম বেশী আর বেপারীরা বলছেন করোনা ভাইরাসের প্রভাবে  কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, শিবালয়, হরিরামপুর ও ঘিওর উপজেলা পদ্মা, যমুনা, ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদীবেষ্টিত।  অসংখ্য খাল-বিল ও ডোবা-নালা এখন কানায় পানিতে ভরা। এসব উপজেলায় রয়েছে বিভিন্ন চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল। নদ-নদীর পানি বাড়লেই এসব চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়ে।  তখন এই অঞ্চলের মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন এই নৌকা। যুগ যুগ ধরে নৌকা এসব অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে আসছে।

ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে প্রতি পুরো হাট। গত বুধবার ( ৮ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শত শত নৌকার পসরা নিয়ে বসে আসে আছে বেপারীরা। জেলা ছাড়াও পার্শবর্তী ঢাকার সাভার, ধামরাই, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর, সিরাজগঞ্জের চৌহুলি এবং রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ  থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা আসে। হাটে সাধারণত ১০ ও ১১ হাতি নৌকার চাহিদাই বেশি। আকার ও মানভেদে প্রতিটি নৌকা দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হাটে ৫ শ থেকে ৬ নৌকা বিক্রি হয়ে থাকে।

বড়টিয়া ইউনিয়নের কলিয়া বাগজান গ্রামের বাসিন্দা এখলাছ উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির চুতুরদিকে বর্ষার পানি। তাই ঘিওর হাটে একটি নৌকা কিনতে আসছি।

বানিয়াজুড়ি জোকা এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ঘিওর হাটে সাধারনত আম, কাঁঠাল, ডুমরা, মেহগনি, শিমুল কাঠের নৌকার চাহিদা বেশী। এ হাটে ছোট ডিঙ্গি বা কোষা নামের  ৭-৮ হাট লম্বা নৌকা বেশী চলে।

দতরা গ্রামের আব্দুল গনি বলেন, গত বছর নৌকা যে দামে ক্রয় করেছিলাম, তারচেয়ে এ বছর ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বেশী দামে কিনতে হচ্ছে।

মিলন নামে নৌকার বেপারী বলেন, নৌকা তৈরি কাঠ, মিস্ত্রি খরচ বাড়ছে । কিন্তু নৌকার দাম বাড়েনি। তাছাড়া করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষ বেকার থাকায় নৌকার চাহিদা থাকলেও ক্রেতা কম। ফলে অনেক নৌকা চালান দামে এবং ক্ষতি দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ঘিওর নৌকার হাটের ইজরাদার গৌরাঙ্গ কুমার ঘোষ বলেন, পানি যত বেশীদিন ধরে থাকে আমাদের নৌকার হাট তত জমে উঠে। এ বছর হাটের শুরু থেকে প্রতি হাটে ৫০০- ৬০০ নৌকা বিক্রি হচ্ছে। হাটটি সাধারণত  ঘিওর উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহের মাঠে বসে। আমরা যেহেতু প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব দিয়ে থাকি। নৌকার জন্য স্থায়ী জমি বরাদ্ধ পেলে আমাদের হাটের জন্য ভাল হত।

মানিকগঞ্জ২৪/ হা.ফ/ ১১ জুলাই ২০২০।

আরো পড়ুুন